গ্যাসের চুলা নিভৃতে যে ক্ষতি করছে আপনার
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা জেলাতেই এখন রান্নার ক্ষেত্রে গ্যাস ব্যবহার হয়। মাটির চুলা, বন্ধুচুলা, স্টোভ কিংবা কাঠের ভুসির চুলাও অনেকাংশে কমে গেছে। ঢাকা বা আঞ্চলিক শহরগুলোতে সহজলভ্য গ্যাসই ব্যবহার বেশি হয়। তবে এই গ্যাসের চুলা আপনার ও আপনার পরিবারকে কত বড় ক্ষতি করছে, তা হয়ত জানেন বা বোঝেন না।
গ্যাসের চুলায় রান্না করলে সেই বাতাসে হতে পারে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। রান্নার মাধ্যমে আসা দূষিত বাতাস আমাদের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের হাঁপানিজনিত রোগ হওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে। গ্যাসের চুলা থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড একটু একটু করে আপনার স্বাস্থ্যে বাজে প্রভাব ফেলছে।
বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেসের’ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাসাবাড়ির ভেতর গ্যাসের চুলা ও প্রোপেন অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহারের ফলে বাতাসে ক্ষতিকারক নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘর ও বাইর-উভয়ের জন্য বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ৭৫ শতাংশ।
অস্ট্রেলিয়ার
একটি জরিপে দেখা যায়, দূষিত
বায়ুর কারণে প্রায় শতকরা ১২ ভাগ শিশুরা
হাঁপানিজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সেখানে শতকরা ৩৮ ভাগ মানুষই
রান্নার জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস
ব্যবহার করে থাকে। সেসব
অঞ্চলে রান্নায় গ্যাসের চুলা ব্যবহারকারীদের ঘরের
বাতাসে কার্বন মনো অক্সাইড পাওয়া
গেছে। যা অত্যন্ত বিষাক্ত
রাসায়নিক পদার্থ। এছাড়া পিএম ২.৫,
বেনজিন ফরমালডিহাইড, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড পাওয়া গেছে। এই উপাদান সবগুলোই
মানবদেহ এবং শ্বাসনালীর জন্য
ক্ষতিকর। বিশেষ করে হাঁপানি এবং
শ্বাসকষ্টজনিত রোগের সূত্রপাত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ইলেকট্রনিক চুলার চেয়ে গ্যাসের চুলায়
রান্নার সময় ৩ গুণ
বেশি নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন
হয়। তাই এইসব কুকার
রান্না করা শিশু এবং
পরিবারের জন্য তুলনামূলক কম
ক্ষতিকর।
তবে আমাদের বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষের পক্ষে বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের কারণে ইলেকট্রিক চুলা এবং কুকারের খরচ বহন করা কষ্ট সাপেক্ষ। তবে ক্ষতিকর নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড থেকে পরিবার ও নিজেকে বাঁচাতে কি করবেন?
* গ্যাসের
চুলা ব্যবহার কমাতে পারলে সেটি হবে সবচেয়ে
কার্যকরী উপায়
* রান্না
ঘরে চিমনি রাখতে পারেন। এক্সহস্ট ফ্যান থাকলে সেটি চালু করে
রাখবেন।
* প্রাকৃতিকভাবে
বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারেন। সম্ভব
হলে একটু খোলামেলা রান্নাঘর
তৈরি করা ভালো।
* হিটার
ও ইলেকট্রনিক কুকারে রান্না করলে বায়ু দূষণের
সম্ভাবনা অনেকাংশই কমে যায়।
মোদ্দাকথা,
রান্না ঘরের দূষিত বাতাস
বের করে দিতে হবে।
তথ্যসূত্র:
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস