ডায়াবেটিস রোগীরা কি কমলা খেতে পারবেন?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
নরম রোদে পিঠ দিয়ে বসে কমলালেবু খাওয়ার মজাই আলাদা। শীতে বাঙালির বরাবরই জমিয়ে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস। ডিসেম্বরের শহর কেক আর কমলালেবুর সুবাসে ম-ম করে। যদিও বিবর্তনের ছন্দে অনেকটাই বদলে গেছে শহরের শীতযাপন, তবুও শীতে কমলালেবু ব্যাগ ভরে বাড়িতে আসবেই।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কমলা খাওয়া স্বাস্থ্যের
জন্য খুবই ভালো। ভিটামিন সি-তে টইটম্বুর কমলার রস খেলে অনেক রোগব্যাধি দূরে থাকে। স্বাদ
আর স্বাস্থ্যের এমন যুগলবন্দি মেলা ভার। তা সত্ত্বেও মধুমেহ রোগীরা কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই
ভয় পান কমলালেবুর দিকে হাত বাড়াতে। এই ভয় কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত?
ভারতের বিখ্যাত পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর
মতে, ফাইবার, ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কমলালেবু সবার জন্যই উপকারী। ডায়াবেটিসের
রোগীরা যদি পরিমিত পরিমাণে খান, তা হলে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই নেই। কমলালেবুর গ্লাইসেমিক
সূচক প্রায় ৪৩, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। সাধারণত গ্লাইসেমিক সূচক
৫৫ বা তার বেশি হলে, সেই সব ফল বা খাবার ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কিন্তু কমলায় সেই ভয় নেই।
কমলালেবুতে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার ও ভিটামিন
সি আছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীদের ভিটামিন
সি বেশি খেতেই বলা হয়। একটি মাঝারি আকারের কমলালেবুতে ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা রক্তে
ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়িয়ে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তা ছাড়া কমলার
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, হার্টের
স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
তবে মনে রাখা দরকার, প্রত্যেকের শরীর সমান
নয়, সমান নয় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াও। কাজেই কমলালেবুই হোক বা অন্য কোনও ফল, খাওয়ার
সময়ে খেয়াল রাখতেই হবে।
ডায়াবেটিসের রোগীরা কীভাবে কমলা খাবেন?
গোটা ফল চিবিয়ে খাওয়াই ভাল, রস করে নয়।
কমলার রস বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেললে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
দিনে একটিই কমলালেবু খাবেন। রক্তে শর্করার
মাত্রা কতটা, কী ডোজ়ে ইনসুলিন নেন, সেই সব দেখে তবেই খেতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক
ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
আপেল, পেয়ারা, বেরি জাতীয় ফলের সঙ্গে মিশিয়ে
ফ্রুট স্যালাড বানিয়ে খেলে বেশি ভাল হয়। তাতে সব ফলই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হবে।