শিশুরা কেন ঘুমাতে চায় না, কী করবেন?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বড়দের পাশাপাশি শিশুদের ঘুমের ব্যাপারটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ভালো ঘুম না হলে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। অনেক শিশু দিনে বেশি ঘুমায় আর রাত প্রায় নির্ঘুম কাটায়। এসব শিশুকে নিয়ে মা-বাবার বিড়ম্বনা একটু বেশিই।
শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ঘুমের সময়েরও তারতম্য ঘটে। যা অনেকটা নির্ভর করে শিশুর দৈনন্দিন খাদ্যাভাস, টয়লেট, খেলাধুলা এবং তার জন্য বাবা মা ঘুমানোর কী ধরনের পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে তার ওপর। শিশুর যখন বয়স বাড়ে তখন তার ঘুমের সময়েরও তারতম্য ঘটে। শিশুর দৈনন্দিন খাবার, টয়লেট, খেলাধুলা এবং ঘুমের পরিবেশের ওপর নির্ভর করে তার ঘুম।
বয়স অনুযায়ী শিশুর প্রয়োজনীয় ঘুমেরসময়-তালিকা -
১-৪ সপ্তাহ: ১৬-১৭ ঘণ্টা।
১-৪ মাস: ১৬-১৭ ঘণ্টা। রাতের ঘুমের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
৪ মাস-১ বছর: ১৪-১৫ ঘণ্টা।
১-৩ বছর: ১২-১৪ঘণ্টা। রাতেই বেশি ঘুমায়, দিনে একবার ন্যাপ নেয় অথবা অল্প সময়ের জন্য ঘুমায়।
৩-৬ বছর: ১১-১২ ঘণ্টা।
৭-১২ বছর: ১০-১২ ঘণ্টা।
১৩-১৮ বছর: ৬-৮ ঘণ্টা।
শিশুরা কেন ঘুমাতে চায় না
১. অনেক শিশু ঘরে বেশি আলো থাকলে ঘুমাতে চায় না।
২. ঘরে যদি টেলিভিশন চলে তাহলে ঘুমাতে চায় না।
৩. ডায়পার ভেজা থাকলে, কিংবা খুব আঁটসাঁট হয়ে আছে, তখন বাচ্চারা অস্বিস্ততে থাকে, এ অবস্থায় সে ঘুমাতে চায় না।
৪. রাত ১০ টা ১১ বাজলেও অনেক সময় শিশু ঘুমাতে চায় না, এর একটি কারণ হতে পারে শিশুর বাবা মায়ের সঙ্গে খেলতে চায়। সান্নিধ্য বা আদর পেতে চায়। এ সময় বুকে জড়িয়ে ধরে রাখা, আদর করাটা সে উপভোগ করতে চায়।
৫. অনেকেই বাচ্চাকে ছোট বেলায় দোলনায় বা কোলে দুলিয়ে ঘুম পাড়ান; এতে আরও অসুবিধা হয়। কারণ এতে সে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বিছানায় শোয়ালেই জেগে ওঠে।
৬. বাচ্চার যদি সর্দির ভাব থাকে বা শরীর খারাপ থাকে, পেটে ব্যথা হলে শিশুদের ঘুমের সমস্যা হয়।
৭. যারা কোলে নিয়ে কিংবা কাঁধে নিয়ে বাচ্চাকে ঘুমিয়ে দেন তাহলে বাচ্চা সেভাবে অভ্যস্ত হতে শুরু করে, ফলে কাঁধ থেকে বিছানায় দিলে তখন তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে বা বারবার জেগে যায়।
৮. সকাল বেলা ১১ টা ১২ টায় ঘুম থেকে উঠলে বা সন্ধায় বেশিক্ষণ ঘুমালে বাচ্চা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবে না।
৯. অনেক শিশু ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে বারবার ঘুম থেকে উঠে যায়।
শিশুর ঘুমের সমস্যা দূর করতে যা যা করবেন:
১. শিশুর জন্য ঘুমের পরিবেশ তৈরি করতে হবে- তাকে প্রতিদিনই একটি নির্দিষ্ট ঘরে নির্দিষ্ট বিছনায় ঘুম পারাতে হবে। বিছানা যেন তার পরিচিত হয়।
২. অবশ্যই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আরামদায়ক বিছানা দিতে হবে।
৩. শোবার ঘরটা কিছুটা অথবা হালকা অন্ধকার রাখতে হবে। অন্তত ঘুমানোর আধা ঘণ্টা আগে থেকে রুমে আলো কমিয়ে ফেলতে হবে।
৪. শিশুরা ঘুমনোর সময় ঘরে অন্য সমস্যদের উচ্চস্বরে কথা বলা যাবে না।
৫. রাতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। শিশুদের জন্য ঘুমানোর আদর্শ সময় রাত সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ৯টা। এই সময় ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
৬. দুপুরের দিকেও নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৭. শিশুকে দিনে খেলাধুলার অভ্যাস করাতে হবে। তাতে শরীর যথেষ্ট ক্লান্ত বোধ করবে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবে।
৮. গরমের দিনে বাচ্চার ঘুমানোর আগে হালকা নরম সুতি কাপড় বা গামছা দিয়ে পুরো শরীর মুছে দিলে শরীরে আরাম বোধ করবে। ভালো ঘুম হবে।
৯. ঘুমানোর সময় মোটা কাপড় বা সিনথেটিক কাপড় পরিহার করতে হবে। পাতলা সুতি কাপড় পরাতে হবে।
১০. ঘরে পর্যাপ্ত ফ্যানের বাতাস অথবা জানালা দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে সে রকম ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. ঘরে এসি চললে মাঝারি তাপমাত্রায় রাখতে হবে।