Logo
Logo
×

লাইফ স্টাইল

বন্যা পরবর্তী সময় যেসব বিষয়গুলো নজরে রাখা জরুরি

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২০ এএম

বন্যা পরবর্তী সময় যেসব বিষয়গুলো নজরে রাখা জরুরি

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছরই কমবেশি আমাদের দেশে বন্যা হচ্ছে। তবে এ বছর টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের ১১টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। এই বন্যা পরিস্থিতির কারণে অসহায় মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। দুর্যোগপূর্ণ এমন ভয়ংকার পরিস্থিতিতে অনেকে জানে বেঁচে গেলেও বন্যা পরবর্তী সময়ে সঠিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবে করুণ পরিণতির শিকার হতে হয় তাদের। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারীদেরকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। 

এছাড়া বন্যার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দিক থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি, যেমন নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পুনর্গঠন, এবং সামগ্রিক জীবিকা নির্বাহ। বন্যার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা একটি চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া হতে পারে। চলুন জেনে নেই এমন কিছু বিষয়।

বাড়ি ফেরার আগে সতর্কতা

বন্যার পানি নেমে গেলে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আগে স্থানীয় প্রশাসন থেকে নির্দেশনা মেনে চলুন। বাড়ি নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করে নিন, বিশেষত বৈদ্যুতিক তার, গ্যাস লিক বা অন্যান্য বিপজ্জনক অবস্থার জন্য।

বাড়ি এবং আশপাশ পরিষ্কার: 

বাড়ি ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস এবং বুট ব্যবহার করুন। ময়লা পানি বা আবর্জনার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।

গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পরীক্ষা: 

গ্যাস বা বিদ্যুৎ ব্যবহারের আগে সংযোগগুলো পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সেগুলো ঠিকমতো কাজ করছে এবং কোনো লিকেজ নেই। 

বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার: 

বন্যার পর সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। বোতলজাত পানি না পেলে, পানি ফোটানো বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ফিল্টার বা স্যান্ড ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ: 

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন। পুরানো বা দূষিত খাবার খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে। খাবার সর্বদা ঢেকে রাখুন এবং রান্না করার পর খাবার ভালোভাবে গরম করে খান।

ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি: 

খাবার খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়া অত্যন্ত জরুরি। দূষিত পানি থেকে দূরে থাকতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষ্কার ও শুকনো পোশাক পরিধান করতে হবে।

মশা প্রতিরোধ: 

বন্যার পরে মশার প্রকোপ বাড়ে, যার ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে। মশারি ব্যবহার করুন, এবং শরীরের খোলা অংশে মশা প্রতিরোধক (মশার স্প্রে বা ক্রিম) ব্যবহার করুন। মশার বংশবিস্তার রোধ করার জন্য বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানির পাত্র বা স্থানে পানি জমতে দেবেন না।

সঠিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা: 

স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বজায় রাখা জরুরি। খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ময়লা-আবর্জনা নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে।

বন্যার পর রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা: 

বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদি পানিবাহিত রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। পেটের সমস্যা, জ্বর, মাথাব্যথা ইত্যাদি দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা নিন। বন্যার পানি ত্বকের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই চর্মরোগের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আবর্জনা ও দূষিত বস্তুর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: 

বন্যার পর আবর্জনা বা দূষিত বস্তু যেমন ভেজা কাঠ, প্লাস্টিক বা ভাঙা কাচ থেকে দূরে থাকুন। এই ধরনের বস্তুতে জীবাণু থাকতে পারে যা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হয়, তবে সুরক্ষামূলক গ্লাভস এবং জুতা ব্যবহার করুন।

প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধপত্র: 

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ যেমন ডায়রিয়া প্রতিরোধক ওষুধ, প্যারাসিটামল, এবং অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার রাখুন। জ্বর, কাশি বা সংক্রমণের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা: 

বন্যার পরে মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলুন এবং প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বন্যার পর সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে রোগের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা সম্ভব। সঠিক পরিচ্ছন্নতা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া বন্যার পরবর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম