গরমে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে যা করবেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৮ এএম
ফাইল ছবি
গ্রীষ্মের গরমে বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা হলো ঘামের দুর্গন্ধ। সুগন্ধি সাবান বা শাওয়ার জেল দিয়ে গোসল করেও অনেক সময়ে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয় না। এটা যেমন আপনাকে সবার মাঝে লজ্জিত করে তেমনি আপনার ব্যক্তিত্বের জন্যও লজ্জার।
এতে করে নিজে যেমন ঝর ঝরে থাকবেন তেমনি সবার কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত আপনি হয়ে উঠবেন আসরের মধ্যমণি। চলুন জেনে নিই ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে কিছু উপায়।
ঘামের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণে করণীয়
১. আর্ম পিট
আর্ম পিট বা বগলে এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড অনেক বেশি থাকে। ফলে ঘামের উৎপত্তি এখানে অনেক বেশি। তাই প্রতিদিন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। এতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কম হবে আর ঘামও কম হবে। এছাড়া বগলের লোম জমে থাকা ঘামকে বাষ্পীভূত হতে দেয় না, ব্যাকটেরিয়া অনেক সময় ধরে দুর্গন্ধ তৈরি করে। তাই নিয়মিত আর্ম পিট ওয়াক্স করুন।
২. গরম পানি দিয়ে গোসল করুন
প্রতিদিন অন্তত একবার গোসল করুন। মনে রাখবেন গরম পানি শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে আর যদি আবহাওয়া গরম থাকে তাহলে চেষ্টা করবেন কয়েকবার গোসল করে নিতে।
৩. ন্যাচারাল ফাইবার যুক্ত কাপড় পরিধান করুন
সিল্ক, সুতি জাতীয় কাপড় ত্বককে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেয়। ফলে ঘাম সহজে বাস্পায়িত হতে পারে।
৪. ঘামযুক্ত পায়ের ট্রিটমেন্ট
পায়ে ঘামের দুর্গন্ধ থাকলে জুতা খোলার সঙ্গে সঙ্গে সবার সামনে নিজেকে কি বিব্রতকর অবস্থাতেই না পড়তে হয়। আগেই বলেছি গরম পানি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তাই প্রতিদিন অন্তত একবার হালকা গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়া মোজার কাপড়টা এমন হওয়া উচিত যেন বাতাস এর ভেতর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে। উল আর ম্যানমেড ফাইবারের সংমিশ্রণে তৈরি মোজাই উৎকৃষ্ট। প্রতিদিন পরিষ্কারভাবে ধোয়া মোজা পরবেন।
৫. লেবু এবং মধু
লেবুর সঙ্গে মধুর সংমিশ্রণ ঘামের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান ঘরোয়া উপায়। খুবই সিম্পল, একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিন, তাতে ২ টেবিল চামচ মধু আর ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। তারপর আপনার যে-সব স্থান ঘামে সে সব জায়গায় এই সলিউশন দিয়ে রিন্স করে নিন। তারপর শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। লেবু শরীরে ঘামের পরিমাণ কমিয়ে আনে।
৬. গরম পানির সাথে নিম এক্সট্রাকট
নিম এক্সট্রাকট একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী যা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। একটি বাটিতে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে তাতে কিছু নিমের পাতা ছেড়ে দিন। তারপর অপেক্ষা করুন ২০ মিনিট। এই কয় মিনিটে নিম পাতা থেকে সমস্ত নির্যাস বের হয়ে যাবে আর পানিও একটু ঠান্ডা হয়ে আসবে। এবার শুকনো তোয়ালে এই পানিতে ডুবিয়ে আপনার যে-সব স্থান ঘামে সেসব স্থান মুছে নিন।
৭. আপনি শুনে হয়ত অবাক হবেন যে, ভিনেগার অতিরিক্ত ঘামের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনে। রাতে ঘুমানোর আগে ভিনেগার আপনার আর্ম পিটে লাগিয়ে ঘুমান আর সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করতে থাকলে আস্তে আস্তে আপনি ঘামের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
৮. যদিও এটা আমাদের দেশে সহজলভ্য নয় তবুও কেউ যদি পেয়ে থাকেন তবে ঘামের দুর্গন্ধ সারাবার কাজে ব্যবহার করতে পারেন টি ট্রি অয়েল। টি ট্রি অয়েলও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য উপকারী। একটি স্প্রে বোতলে পানি ভরুন তারপর এর সাথে ৩ ফোটা অয়েল মিশান। প্রতিদিন গোসল করার আগে ব্যবহার করুন।
৯. শসাতে পানির ভাগ বেশি থাকে যা শরীরের গন্ধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১২. ডায়টেশিয়ানের মতে সালফিউরিক সমৃদ্ধ খাবার যেমন ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি পরিমাণে কম খেতে হবে। কারণ এগুলোতে মিনারেল সালফার থাকে যা গন্ধযুক্ত গ্যাস আমাদের ত্বকের সাহায্যে নির্গত করে।