Logo
Logo
×

লাইফ স্টাইল

শিশুর অঙ্কে ভীতি? জেনে নিন দূর করা সহজ কিছু উপায়

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম

শিশুর অঙ্কে ভীতি? জেনে নিন দূর করা সহজ কিছু উপায়

ছবি : সংগৃহীত

গণিতের ভীতি আমাদের দেশে পুরোনো। আশেপাশে খুঁজলে এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে, যাদের গণিতে রয়েছে চরম ভয়। ছোট থেকে বড় সব ধরনের মানুষের মধ্যেই দেখা যায় গণিতের প্রতি এক ধরনের বিতৃষ্ণা। অনেক শিশুই আছে সব বিষয়ে ভালো নম্বর পায় কিন্তু গণিতে ভালো করতে পারে না। এজন্য তাকে পরিবার থেকে শুরু করে স্কুলেও অনেক কথা শুনতে হয়। বারবার শোনানোর ফলে শিশুর মনে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। যা তার লেখাপড়ায় প্রভাব পড়ে। তবে এই সমস্যারও সহজ সমাধান রয়েছে। চলুন জেনে নেই কীভাবে শিশুদের গণিত ভীতি দূর করবেন… 

১) শিশুদের গণিতে ভয় পাওয়ার প্রবণতাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘অ্যারিথমোফোবিয়া’। গণিতে বই দেখলে ভয়, গণিত পরীক্ষা দেওয়ার সময় উদ্বেগ, আতঙ্কে শরীর খারাপ হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। এই সমস্যা কাটাতে প্রথমত সময় দিতে হবে শিশুকে। স্কুলে যতই ভাল শেখানো হোক না কেন বা গৃহশিক্ষক ঘড়ি ধরে পড়িয়ে যান না কেন, সব শেষে আপনাকেই দেখতে হবে, শিশু কতটা শিখল। গণিতের ফরমুলা মনে রাখতে সমস্যা হচ্ছে, না কি কষতে গিয়ে ভুলভ্রান্তির কারণে উত্তর মিলছে না, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবটাই দেখতে হবে। সন্তানকে বোঝাতে হবে, দশম শ্রেণি পর্যন্ত গণিত বাধ্যতামূলক। আর পাঁচটা বিষয়ের মতোই সে যেন তা যত্ন নিয়ে শেখে। 

২) স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের কাছ থেকে শিশু এমন কিছু শুনছে না তো, যা থেকে গণিত ভীতি তৈরি হচ্ছে, সেটাও খেয়াল রাখুন। অনেকেই বলে থাকেন, উঁচু ক্লাসে উঠলে গণিত আরও কঠিন। সেটা শুনেও শিশু উদ্বেগে ভুগছে কি না, তা দেখতে হবে। তাই সব সময়ে ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক কথা বলুন। 

৩) ছোট বাচ্চা হলে অঙ্কের যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ মজার খেলার মাধ্যমে শেখান। চারপাশে শিশু যা দেখছে, তার থেকেই উদাহরণ তুলে ধরে বোঝান। এতে রোজের জীবনের সঙ্গে অঙ্ক কতটা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, তা বুঝতে পারবে শিশু। দোকান-বাজারে নিয়ে যান, ছোটখাটো হিসেব কষতে দিন, ঘড়িতে সময় দেখতে শেখান, তা হলেই ছোট থেকে অঙ্কের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। 

৪) খেলাধুলার মাধ্যমে অঙ্কের প্রতি শিশুর আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলুন। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ব্লক, ধাঁধা, কার্ড গেম এবং এমনকি ভিডিও গেম থেকেও অঙ্ক করতে ক্রমশ আগ্রহ জন্মাতে পারে বাচ্চার। অভিভাবকদের সঙ্গে গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করতে চেষ্টা করান তাকে। খেলার আনন্দে ক্রমশ অঙ্কের প্রতি টান তৈরি হবে। এই ধরনের খেলা মস্তিষ্ককে অনেক সতর্ক এবং বেশি সচল করে তোলে। তা ছাড়াও যত বেশি বাচ্চারা লুডো, দাবা এবং সংখ্যাযুক্ত যে কোনো খেলা খেলবে অঙ্ক করার ব্যাপারে এক সময় নিজেই আড়ষ্টতা কাটিয়ে উঠবে সে। 

৫) সন্তান নিয়মিত অঙ্ক অভ্যাস করছে কি না, সেটা দেখুন। অনেক সময়ে স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের থেকে ভালোভাবে শিখলেও অভ্যাস না করার কারণে পরে গিয়ে সিলেবাসের অনেকটাই জমে যায়। তখন আতঙ্ক তৈরি হয়। শিশু যেন নোটবই খুলে না বসে, সেটাও দেখতে হবে। তা হলে চেষ্টা করার অভ্যাসই তৈরি হবে না। 

৬) এখন বিভিন্ন রকম ব্রেন গেম পাওয়া যায়। তাতেও অঙ্কের ধাঁধা থাকে। সেগুলি শেখানোর চেষ্টা করুন। যারা অঙ্ক ভাল করে অভ্যাস করে, তাদের চিন্তাভাবনা আরও উন্নত হয়। যে কোনোও জটিল সমস্যা সমাধানের অভ্যাসও রপ্ত হয়। বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তিও প্রখর হয়। 

৭) পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও নজর দিতে হবে। একটানা বই নিয়ে বসিয়ে রাখলে শিশুর পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে না। নাচ-গান, আঁকা, আবৃত্তি ইত্যাদি শেখাতে হবে শিশুকে। তা হলে বিভিন্ন বিষয়ে জানা ও শেখার আগ্রহ তৈরি হবে। একাগ্রতাও বাড়বে। 

৮) কখনও তুলনা করবেন না। অনেক শিশুই অঙ্কে কাঁচা হয়। কিন্তু, অন্যের সঙ্গে তুলনা টানতে শুরু করলে আত্মবিশ্বাস হারাবে সে। রাগারাগি, মারামারি, বকাবকি করলে তা শিশুর স্মৃতিতে চেপে বসবে। তখন ভয়ের কারণে আর অঙ্ক কষতেই চাইবে না। 

৯) অঙ্কের কোনোও একটি বিষয়ে ভয় বা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেক সময়েই তৈরি হয়। এর কারণ দু’টি। এক, শিক্ষক যা শেখাচ্ছেন, তা রপ্ত করতে পারছে না। দুই, অভ্যাসের অভাবে শেখানো জিনিসও ভুলে যাচ্ছে। তাই মা-বাবাকে ধৈর্য ধরে দেখতে হবে গলদটা ঠিক কোথায়। মেজাজ হারালে চলবে না। অভিভাবকেরা যদি নিজেদের ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় দিয়ে সঠিক ভাবে হাল ধরতে পারেন, তা হলেই অসাধ্যসাধন করতে পারবে সন্তানও। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম