প্রকাশ্যে খুন হওয়া স্কুলছাত্রীর হত্যাকারীকে দয়া নয়: হাইকোর্ট
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ০১:০৬ এএম
মাদারীপুরে স্কুলগামী ১৪ বছরের ছোট (মাইনর) মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যাকারীকে দয়া দেখানোর কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতে অভিযুক্তকে সঠিকভাবে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে। সেটা বহাল রেখে তার আপিল খারিজ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর একমাত্র আসামির আপিল ও জেল আপিল খারিজ এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ) করে বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
সম্প্রতি এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। ৫২ পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান।
রায়ে বলা হয়, ১৪ বছরের ছোট মেয়েকে (মাইনর) প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছিল। পূর্বপরিকল্পনায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ অভিযুক্তকে দয়া দেখানোর যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ নেই। এছাড়া তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করারও সুযোগ নেই। বিচারিক আদালত যথাযথভাবে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে। ওই সাজা আইনগতভাবে সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য। তাই মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল খারিজ করা হলো। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার নবগ্রাম গ্রামের নির্মল মণ্ডলের মেয়ে নিতু নবগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। প্রতিবেশী বীরেন মণ্ডলের ছেলে মিলন মণ্ডল প্রায়ই নিতুকে উত্ত্যক্ত করত। ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিতু স্কুলে যাওয়ার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। মিলন তার পিছু নেন। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম উত্তরপাড়া ঠাকুরবাড়ি নামক স্থানে গ্রামের একটি রাস্তায় সে নিতুকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ পাশের একটি নালায় ফেলে রাখে। এরপর পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী মিলনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।
ঘটনার দিন রাতে নিতুর বাবা নির্মল মণ্ডল বাদী হয়ে কালকিনির ডাসার থানায় মিলনের নামে হত্যা মামলা করেন। এ মামলার একমাত্র আসামি মিলনকে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন আহমেদ মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে মিলন আপিল ও জেল আপিল করেন। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল খারিজ করা হয়।