বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতাকে গ্রেফতারের আবেদন
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:১৪ পিএম
![বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতাকে গ্রেফতারের আবেদন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/01/09/image-761262-1704809693.jpg)
গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব দলেন সদস্য মুনসুর আলমকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা দাবি করে তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া সুলতানার আদালতে এ আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস। পরে আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, উল্লেখিত আসামিরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ সংঘটনের মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থদাতা ও ইন্ধনদাতা। তাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মর্মে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এমতাবস্থায় যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় গ্রেফতার হাজতি আসামি নবী উল্লাহ নবী ও বংশাল থানার মামলায় গ্রেফতার হাজতি আসামি মনসুর আলমকে এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে হাজতি পরোয়ানা ইস্যু করা একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে চলন্ত বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এসএম নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যিনি ওই ঘটনার সময় ট্রেনটিতে কর্তব্যরত ছিলেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৫ জানুয়ারি দুপুর ১টার সময় ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে। ট্রেনটি রাত আনুমানিক ৯টার সময় সায়েদাবাদ এলাকা পৌঁছানো মাত্র ট্রেনের ৭৯৩৭ নম্বর কোচের ‘চ’ বগিতে ধোঁয়া দেখে চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। তখন ওই বগিতে ডিউটিতে থাকা মোহাম্মদ আলী আগুন আগুন বলে চিৎকার করে যাত্রীদের সতর্ক হতে বলেন এবং টেনের শিকল টেনে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় আমি (বাদী) ভ্যাকুয়াম প্রেস করে ট্রেনটি থামাই। রাত আনুমানিক ৯টা ২মিনিটের দিকে গোপীবাগ ও গোলাপবাগের মাঝামাঝি জামে মসজিদের সামনে ট্রেনটি থামে। ততক্ষণে আগুন দাউ দাউ করে ‘চ’ বগি থেকে ‘ছ’ বগিতে এবং ‘পাওয়ার কার নম্বর ৭৫২৬ ‘ভ’ বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে ট্রেনে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি এবং জরুরি ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম পাঠানোর অনুরোধ করি।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, অল্পসময়ের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিস রেলওয়ে পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি), ডিএমপি পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রেনের তিনটি বগির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল, রেলওয়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আরএনবি ও ডিএমপি পুলিশের সহায়তায় তল্লাশি চালিয়ে ‘চ’ বগি থেকে একজন নারীসহ চারজনের বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ১০-১২জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানতে পারি। পরবর্তীতে রেলওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়।