প্রতারণার মামলা: বাদীকে মাদকাসক্ত বানানোর চেষ্টা!
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৫০ পিএম
প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পদ্মা গ্রুপ অব কোম্পানির চার পরিচালকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নাজিবা নাহিদ খান। ১৩ অক্টোবর মতিঝিল থানায় এ মামলা হয়। এর পর থেকেই মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি দিচ্ছিলেন আসামিরা। মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণের চেষ্টা চালানো হয়। এ বিষয়ে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ৬ নভেম্বর গুলশান থানায় জিডি করেন নাজিবা নাহিদ।
তিনি বলেন, মামলার পরপরই আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেন। রাজি না হওয়ায় ১৪ অক্টোবর অপহরণের হুমকি দেন। ১৮ অক্টোবর গুলশানের বাসা থেকে আমাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান। অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে সাদা স্ট্যাম্পে ও কয়েকটি কোম্পানির রেজুলশনে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পরে বারিধারার প্রত্যয় মেডিকেল ক্লিনিক লিমিটেড মাদক নিরাময় কেন্দ্রে আটক রাখে। সেখানে বেশ কিছু দলিল ও চেক বইতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। পরে সেখান থেকে মুচলেকা দিয়ে আমার মা আমাকে উদ্ধার করেন। এরপর মূল আসামিরা দেশের বাইরে চলে যান। দেশের বাইরে থেকেই এখন তারা আমাকে এবং মাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
মামলার বিবরণীতে নাজিবা বলেন, আসামিরা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ আমিরের (বাদীর বাবা) সঙ্গে প্রতারণা করেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের কথা বলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ফ্রোজেন মানি উঠানোর কথা বলে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ২৩ আগস্ট কোম্পানির জমি বিক্রি করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছে।
তিনি বলেন, আমার বৃদ্ধ বাবা খান মোহাম্মদ আমির বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরা ও সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম। এই অক্ষমতাকে পুঁজি করে আসামিরা বিভিন্ন কৌশলে তাকে জিম্মি করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। আত্মসাৎ করা টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন।
পদ্মা গ্রুপ অব কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুন্না রায়হান যুগান্তরকে বলেন, অর্থ আত্মসাৎ, মামলা এবং জিডির বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না।
প্রতিষ্ঠানটির এজিএম (স্টেট) ও অর্থ আত্মসাৎ মামলার অন্যতম আসামি জিয়া উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বয়োবৃদ্ধ মানুষ। তার কোনো ছেলে সন্তান নেই। চার মেয়ের মধ্যে তিনজনই বিদেশে থাকেন। একজন দেশে থাকেন। যিনি দেশে থাকেন তিনিও প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক। চেয়ারম্যানের মেয়ে, মেয়ের জামাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা রয়েছে। ওই ঝামেলা প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়েছে।