Logo
Logo
×

আইন-বিচার

হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতারের পর যা বললেন হারুন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২ পিএম

হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতারের পর যা বললেন হারুন

গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীর (মিয়ান আরেফি) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অন্যের রূপধারণ করে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে করা পল্টন থানার মামলায় মঙ্গলবার বিকালে তাকে সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এখন তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এর আগে আজ (মঙ্গলবার) বিকালেই সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর কিছুক্ষণ পরই তাকে গ্রেফতারের কথা জানালেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ডিবিপ্রধান হারুন জানান, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসাবাদে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন বাইডেনের কথিত সেই উপদেষ্টা

সারওয়ার্দীকে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডিবিপ্রধান বলেন, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের দিন বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত এবং এক সদস্য নিহত হন। ওই দিন সন্ধ্যায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফি নামে একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়া হয়। মিয়ান আরেফি বাংলাদেশের পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন।

ডিবির হারুন বলেন, এ ঘটনায় মিয়ান আরেফিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি আমাদের জানান- মিয়ান আরেফি এসব বলতে চাননি। বাসা থেকে নিয়ে আসার সময় হাসান সারওয়ার্দী তাকে এসব কথা বলার জন্য শিখিয়ে দিয়েছিলেন। আর তাকে সহায়তা করেছেন ইশরাক ও অ্যাডভোকেট বেলাল নামে একজন।

ডিবিপ্রধান বলেন, মিয়ান আরেফির এমন বক্তব্যের পর রাজধানীজুড়ে বাসে অগ্নিসংযোগসহ আরও বেশ কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার দুই নম্বর আসামি সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

হারুন বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে তাকে রিমান্ডে আনব। রিমান্ডে এনে তারা কী ষড়যন্ত্র করেছিলেন জানার চেষ্টা করব। তারা মিয়ান আরেফিকে বিএনপি কার্যালয়ে এনে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, পুলিশ-আনসার-র‍্যাব বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন, সবকিছু আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানাব।

উল্লেখ্য, রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ও বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক সংঘর্ষের পর শনিবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক রহস্যময় ব্যক্তিকে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, গোলাপি রঙের শার্ট পরিহিত ওই ব্যক্তি ইংরেজি ভাষায় কথা বলছেন। নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা দাবি করা ওই ব্যক্তি সেই ভিডিও নিয়ে খবর প্রকাশ করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।

রোববার দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন বলে জানান অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবির গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা। 

গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, আটকের পর মিয়ান আরেফিকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরেফী জানান, বাসা থেকে কয়েকটি বিষয় শিখিয়ে এনে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে কথা বলানো হয়েছে। তাকে বিএনপি অফিসে নিয়ে যাওয়ার পেছনে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

মিয়ান আরেফি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে থাকেন। তিনি একজন বাংলাদেশি আমেরিকান। জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায়। তিনি মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশে আসেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম