দুই বছর ধরে স্ত্রীকে হত্যার সুযোগ খুঁজছিলেন বাবুল, দাবি মিতুর বাবার
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ০৯:১৪ পিএম
মিতু ও বাবুল। ফাইল ছবি
সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিত্যু হত্যা মামলায় আদালতে দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্য দিলেন তার বাবা মোশাররফ হোসেন। মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে তিনি দাবি করেছেন, স্ত্রীকে হত্যার দুই বছর আগেই ছক এঁটে সুযোগ খুঁজছিলেন বাবুল আক্তার। এমন সন্দেহের কথা মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের আগেও জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও ৭ বছর আগে মেয়ে মিতু হত্যাকাণ্ডের পর জামাতার (বাবুল আক্তার) পক্ষেই কথা বলতে দেখা গিয়েছিল তাকে।
মঙ্গলবার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসীম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন মিতুর বাবা। এর আগে গত ৯ এপ্রিল একই আদালতে তিনি প্রথম দফায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। আজ অসমাপ্ত সাক্ষ্য শেষ করেন। সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর তাকে জেরা শুরু করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
মামলাটির প্রধান আসামি খুনের শিকার মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আগামী ৮ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
সূত্র জানায়, মোশাররফ হোসেন তার সাক্ষ্যে বলেছেন- ঘটনার আগেও বাবুল আক্তার স্ত্রী মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য তিনি তার সোর্স মুসার সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুর রশিদ যুগান্তরকে বলেন, ‘মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম দিনই তার সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বাবুল আক্তার এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার কারণে নিজের স্ত্রী মিতুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করিয়েছেন। এই কাজে তিনি নিজের সোর্সদের ভাড়া করেছিলেন। সেই বক্তব্যের সপক্ষে তিনি মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যেও বিভিন্ন তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরেছেন। সাক্ষ্য শেষে তাকে জেরা শুরু করেছেন আসামিপক্ষ।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা জেরা শুরু করেছি। তবে তা শেষ হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আদালতে সাক্ষী মোশাররফ হোসেন গায়ত্রী অমর সিং নামের এক নারীর সঙ্গে তার মেয়ের জামাই বাবুল আক্তারের পরকীয়ার যে বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা নিয়ে আমরা তাকে প্রশ্ন করেছি। এছাড়া তিনি এই হত্যাকাণ্ডে বাবুলকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছেন ২০২১ সাল থেকে, যদিও ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালে। তার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার সাক্ষ্যাৎকারে তিনি বলেছেন, মিতু ও বাবুলের দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো ছিল। এই বিষয়েও আমরা তাকে প্রশ্ন করেছি।’
আসামিপক্ষে গোলাম মাওলা মুরাদ ছাড়াও অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নিজের মেয়ে হত্যা মামলার প্রথম দফায় সাক্ষ্যে মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, পরকীয়ার কারণে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও তার স্ত্রী মিতুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ লেগেছিল। বিষয়টি চরম আকার ধারণ করলে মিতু কয়েকবার বাবার বাড়িতে চলে যেতে চেয়েছিলেন এবং একবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। একপর্যায়ে স্ত্রী মিতুকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে খুন করান বাবুল আক্তার। নাটক সাজাতে হত্যাকাণ্ডের দিন নিজে অবস্থান করেন ঢাকায়।