আমরা বৈষম্যহীন দেশ চাই: শহিদ আবু সাঈদের ভাই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৯ পিএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহিদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহিদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, দেশে বৈষম্য দূর করার জন্য হাজার হাজার ছাত্র জীবন দিয়েছে। এ দেশে যেন নতুন করে বৈষম্য তৈরি না হয় এবং আর কখনো নতুন স্বৈরাচারী কোনো শাসক মাথা চাড়া না দিয়ে উঠতে না পারে সে জন্য সচেতন নাগরিক ও ছাত্র-জনতাকে সোচ্চার থাকতে হবে। স্বৈরাচারী কোনো শাসকের মনোভাব তৈরি হলে সেটাকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিহত করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন নায্য দাবি আদায়ের জন্য কোনো ছাত্রকে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে না হয়।
রাজধানীর যমুনা
ফিউচার পার্কে মুঘল কনভেনশন সেন্টারে শনিবার দৈনিক যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে
আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন আবু সাঈদের বড় ভাই।
আবু হোসেন বলেন,
আমরা একটা বৈষম্যহীন নীতিবান দেশ দেখতে চাই। এ দেশে রক্ষার জন্য কাউকে যেন জীবন না দিতে হয়। যারা ২০২৪
সালের জুলাই আগস্টে শহিদ এবং আহত হয়েছেন তাদের পাশে সরকারের যেন সুদৃষ্টি থাকে এ আহ্বান
জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন,
গণঅভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছেন আল্লাহ যেন তাদের শহিদ হিসেবে কবুল করেন এ দোয়া কামনা
করেন দেশবাসীর কাছে তিনি। একই সঙ্গে আহতদের
সুচিকিৎসা দিতে দেশের বিত্তমান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এদিকে জুলাই
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদ চারজনের পরিবারকে সম্মাননা দিয়েছে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী
যমুনা গ্রুপ। যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে চার শহিদ পরিবারের সদস্যদের হাতে
সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ (২ লাখ টাকা) তুলে দেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তরের
প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।
শনিবার বিশ্বের
তৃতীয় এবং এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কের মহল হল রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে
যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম ইসলাম, যমুনা গ্রুপের পরিচালক সোনিয়া
সারিয়াত, পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম, পরিচালক সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম, পরিচালক এসএম
আব্দুল ওয়াদুদ ও যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
শহিদ আবু সাঈদের
ক্রেস্ট তার বড় ভাই আবু হোসেন, শহিদ মো. আব্দুল গণির ক্রেস্ট তার বাবা আব্দুল মজিদ
শেখ, মা লাকী আক্তার, ছেলে আলামিন ও মেয়ে জান্নাত, শহিদ নাঈমুর রহমানের ক্রেস্ট তার
বাবা খলিলুর রহমান ও মা নাসিমা বেগম এবং শহিদ মো. গোলাম নাফিজের ক্রেস্ট তার মা নাজমা
আক্তার নাসিমা ও ভাই গোলাম রাসেল নাদিম গ্রহণ করেন।
বেগম রোকেয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২২) ছিলেন কোটাবিরোধী
আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক। সংঘর্ষ শুরু হলে আন্দোলনকারীদের সবার আগে
ছিলেন আবু সাঈদ। অন্যরা একটু পেছনে ছিলেন। তার ঠিক সামনে অবস্থান ছিল পুলিশের। ১৭ জুলাই
দুপুরের দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে তিনি পুলিশের গুলিতে গুরুতর
আহত হন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার
দৃশ্য ধারণ করে একাধিক গণমাধ্যম। যমুনা টেলিভিশনও এ ধরনের একটি ভিডিও প্রচার করে। ওই
ভিডিও থেকে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়।