ফ্যাসিবাদের সময়েও সাহস করে কথা বলেছে যুগান্তর: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
আওয়ামী লীগের বিগত ১৬ বছরের শাসনকালে বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেই সময়ে ফ্যাসিবাদ মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, সেই সময়ে দৈনিক যুগান্তর সাহস করে অনেক কথা বলেছে, কথা বলার চেষ্টা করেছে। সেজন্য যুগান্তরকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক কনভেনশন সেন্টারের মুঘল হলে শনিবার দৈনিক যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতেই মির্জা ফখরুল যুগান্তরের প্রয়াত স্বপ্নদ্রষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাবুলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। বলেন, তিনি (নুরুল ইসলাম) সারাজীবন পরিশ্রম করে যুগান্তর ও যমুনা টিভি প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীন গণমাধ্যমের অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
মির্জা ফখরুল আশা করেন, যুগান্তর তার চরিত্র অক্ষুণ্ন রেখে গণতন্ত্র রক্ষায় আগামী দিনেও ভূমিকা রাখবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। মানুষ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে গণতন্ত্রের জন্য। বাংলাদেশের মানুষ ২০২৪-এ প্রাণ দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য, স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য।
দীর্ঘ ২৫ বছরের যাত্রায় যুগান্তর দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলায় মির্জা ফখরুল যুগান্তরের প্রকাশক, সম্পাদক, মালিকপক্ষ, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
এদিন দুপুরে যমুনা ফিউচার পার্কের কনভেনশন সেন্টারে কেক কাটেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তরের প্রকাশক সালমা ইসলাম, যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম ইসলাম, গ্রুপ পরিচালক সোনিয়া সারিয়াত, মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম এবং শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ, যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহণ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মঈন খান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এসএমএ ফায়েজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আগামী দিনেও নির্ভয়ে সাহসের সঙ্গে, দুর্নীতি-অত্যাচারের বিরুদ্ধে, সত্য বলার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাবে যুগান্তর।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- যুগান্তরের উপসম্পাদক এহসানুল হক বাবু, আহমেদ দীপু, বিএম জাহাঙ্গীর ও দেওয়ান আসিফ রশীদ, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, যমুনা টেলিভিশনের যুগ্মপ্রধান বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম এবং যুগান্তর পরিবারের সদস্যরা।
এ ছাড়া শনিবার সারা দেশে যুগান্তরের ব্যুরো অফিসে কেক কেটে এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়। অনুষ্ঠানে যুগান্তরের পাঠক, শুভাকাক্সক্ষী, বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিক্রয় প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
২০০০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে দৈনিক যুগান্তর। খুব অল্প সময়ে পাঠকের মন জয় করে নেয় পত্রিকাটি। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ফলে দেশের সংবাদপত্রে শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে খুব বেশি সময় নিতে হয়নি। আর এখনো এ অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে এ দীর্ঘপথ কখনোই মসৃণ ছিল না। সত্য ও সাহসী সংবাদ প্রকাশের কারণে বিভিন্ন সময়ে মামলা-হামলাসহ প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। কিন্তু পাঠকের ভালোবাসায় সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে চলেছে অবিরাম গতিতে। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও সব বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে চলার দৃঢ়প্রত্যয় ছিল। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতারা।