Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

জমি-জমা ও সম্পত্তির জাকাতের হিসাব করবেন যেভাবে

Icon

মুফতি বিলাল হুসাইন খান

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:০৪ এএম

জমি-জমা ও সম্পত্তির জাকাতের হিসাব করবেন যেভাবে

ইসলামে নামাজের পরই জাকাতের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে। 

জাকাত ইসলামের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যা ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে সম্পদের ভারসাম্য রক্ষা করে সমাজে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে। এটি নিছক একটি দান নয়, বরং একজন মুসলিমের জন্য ফরজ ইবাদত।

ধনী লোকদের ধনসম্পদের ৪০ ভাগের এক অংশ অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে জাকাত হিসাবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ইসলামে। জাকাত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়ের বাধ্যবাধকতা না-থাকলেও রমজান মাসই জাকাত আদায়ের সর্বোত্তম সময়। রমজান মাসে যেকোনো ধরনের দান-সাদকা করলে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি নেকি হাসিল হয়।

আজকে আমরা জমি-জমা ও সম্পত্তির জাকাতের খুঁটিনাটি কিছু বিষয়ে জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।   

১. বসবাসের জমি, ঘর-বাড়ি ও প্লট-এর উপর জাকাত আসে না। কারণ, এগুলো মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অন্তর্ভূক্ত। 

২. যে সব ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট ও গুদামঘর ভাড়া দেওয়া হয়, সেগুলোর মূল্যের উপর জাকাত আসে না। কারণ, এগুলো হলো জীবিকা উপার্জনের মাধ্যম। আর জীবিকা উপার্জনের মাধ্যমের উপর জাকাত আসে না। 

অবশ্য এগুলোর মালিকের উপর কুরবানী দেওয়া, হজ করা ও সদকায়ে ফিতর দেওয়া আবশ্যক। কিন্তু এ সব সম্পত্তির ভাড়ার টাকা দৈনন্দিন যাবতীয় কাজে ব্যয় করার পরও যদি বৎসরান্তে নেসাব পরিমাণ থেকে যায় অথবা অন্য সব মালের সঙ্গে মিলেও যদি নেসাব পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে এ অবশিষ্ট ভাড়ার টাকার উপর জাকাত ফরজ হবে। 

৩. ব্যবসা/বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও প্লটের মূল্যের উপর জাকাত ফরজ হয়। এমনিভাবে বিক্রয় করে পুঁজি বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত জমি, ঘর-বাড়ি, দোকান ও অফিস রূম ইত্যাদির মূল্যের উপর জাকাত ফরজ হয়। 

চাই বৎসরান্তে এগুলো বিক্রি হোক বা না হোক, বৎসরান্তে এগুলোর দাম বৃদ্ধি হোক বা না হোক, তথাপিও বৎসরান্তে এগুলোর মূল্যের উপর জাকাত ফরজ হবে। কারণ, ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ব্যবসায়িক পণ্যের মধ্যে গণ্য হয়। আর ব্যবসায়িক পণ্যের উপর জাকাত ফরজ হয়। 

৪. কারখানা ও মিল-ফ্যাক্টরির জমি, ফার্নিচার, নির্মাণকৃত বির্ল্ডিং-এর মূল্যের উপর জাকাত আসে না। কারণ, এগুলো হলো উপার্জনের মাধ্যম ও উপকরণ; যার মূল্যের উপর জাকাত ফরজ হয় না। এগুলো ব্যবসায়িক পণ্য ও অর্থ-কড়ির মধ্যে গণ্য নয়। 

৫. কারখানা ও মিল ফ্যাক্টরির উপার্জিত লভ্যাংশ, উৎপাদিত মালামাল, কাঁচামালের বিক্রয় মূল্যের উপর জাকাত ফরজ হবে। 

৬. কারখানা ও মিল-ফ্যাক্টরির কাজে যে গাড়িগুলো ব্যবহৃত হয়, তার মূল্যের উপর জাকাত আসে না। চাই গাড়িগুলো প্রয়োজনের অতিরিক্ত হোক। তবে অতিরিক্ত গাড়ি থাকলে সে কারণে কুরবানি, সদকায়ে ফিতর ও হজ করা আবশ্যক। 

৭. যদি কোনো কারখানা বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সমুদয় উপার্জন থেকে ঋণ পরিশোধ করার পর যদি অবশিষ্ট উপার্জন বা উৎপাদিত মালামাল নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে তার উপর জাকাত ফরজ হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম