Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

রহমতের আলো ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি হৃদয়ে

Icon

মাহমুদ আহমদ

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১০:২৬ এএম

রহমতের আলো ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি হৃদয়ে

আল্লাহতায়ালার অপার কৃপায় পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশকের রোজা আমরা অতিবাহিত করার সৌভাগ্য পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ। রমজান মাস আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বড় নেয়ামত। রমজানের রোজার মাধ্যমে আমরা সহজেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।

আল্লাহতায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ, তিনি আমাদেরকে পবিত্র এ মাস লাভের সৌভাগ্য দিয়েছেন। মানুষ যদি ভাবে তাহলে দেখবে, আল্লাহতায়ালার অনুগ্রহরাজির কোন শেষ নেই। তাই আমাদেরকে সর্বদা আল্লাহতায়ালার শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে থাকা উচিত।

এ মাসে আমাদেরকে এমনভাবে ইবাদত করতে হবে যাতে রমজানের রহমত থেকে আমরা বঞ্চিত না হই এবং আল্লাহপাকের ভয় ও ভালোবাসায় রোজার ফজিলত লাভে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করি।  যেভাবে রহমত এসেছিল আমাদের আগের যুগের নবি-রাসুলদের উম্মতের উপর। 

আল্লাহ মুমিনকে অভয় দিয়ে ঘোষণা করেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সেভাবেই রোজা রাখাকে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য বিধিবদ্ধ ছিল এ রোজা। যাতে তোমরা আল্লাহ ভয় অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৮৩)

পবিত্র মাহে রমজানে যারা নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা রাখে এবং বিশেষ ইবাদতে রত থাকে তাদেরকে কোনোভাবেই জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করতে পারবে না। 

যেভাবে হাদিস শরিফে এসেছে হজরত মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজা জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি ঢাল এবং দুর্গ।’ (মুসনাদে আহমদ)

একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই যারা রোজা রাখে তাদের সকল পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। হাদিস শরিফে এসেছে- মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ‘যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানের রোজা রাখে, আল্লাহ পাক তার জীবনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’ (সহিহ বুখারি) 

আমাদেরকে সেই রোজা রাখা উচিত, যা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের উঠাবসা, চলাফেরা, সর্বোপরি আমাদের প্রতিটি কথা ও কাজ দ্বারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম হবে এবং আমাদের এসব পুণ্য আমল খোদার সঙ্গে মিলিত করবে। 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আমার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে পুরো চেষ্টা-সাধনা করে, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমাদের পথের দিকে আসার সুযোগ দেই।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৬৯) 

মূলত, যারা আল্লাহতায়ালার দিকে আসার চেষ্টা করে এবং তার সন্তুষ্টির প্রত্যাশীয় তিনি তাদেরকে তার দিকে আসার সুযোগ করে দেন। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিকে আসার ও সন্তুষ্টির পথগুলোর মধ্যে একটি পথ হল রমজানের রোজা। রোজাদারকে তিনি অনেক বেশি পছন্দ করেন বলেই জান্নাতে প্রবেশের জন্য বিশেষ একটি দরজা রেখেছেন।  

সহিহ হাদিসে এসেছে হজরত সাহল বিন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত, তিনি মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: ‘জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। একটি দরজার নাম হচ্ছে- রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে রোজাদারগণ ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ বুখারি)

অপর একটি হাদিসে এসেছে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি শাহী দরজা আছে যা দিয়ে একমাত্র রোজাদারগণই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (‘আর যে ব্যক্তি সেই রাইয়ান দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে আর কখনো পিপাসিত হবে না।)’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)

তাই আমাদের উচিত হবে, রমজানের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পুণ্যকর্মের মাধ্যমে জান্নাতের এ বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সৌভাগ্য অর্জন করা। 

পুণ্যকর্মের মাধ্যমে আমাদেরকে সেই সকল উচ্চতায় পৌঁছার চেষ্টা করতে হবে যেখানে শয়তান পৌঁছতে পারে না। 

রমজানের দিনগুলোতে দান, সদকা-খয়রাতে আমাদেরকে অগ্রগামী হতে হবে, কেননা আমাদেরকে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তিনি যেভাবে পবিত্র মাহে রমজানকে অতিবাহিত করেছেন ঠিক সেভাবে আমাদেরকেও রমজানের দিনগুলো অতিবাহিত করার চেষ্টা করতে হবে। রহমতের আলো যেন ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি হৃদয়ে।

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে পবিত্র এ মাহে রমজানে সমস্ত মন্দ কাজ পরিত্যাগ করে অনেক বেশি ইবাদতে রত থেকে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন, আমিন। 

লেখক: ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম