
রমজান মাসে বিশেষ কী আমল করা যায়? এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে এসেছে- হজরত সালমান (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করার হুকুম করেছেন। প্রথমত কালেমায়ে শাহাদাত।
অনেক হাদিসে এই কালেমায়ে শাহাদাতকে সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির বলা হয়েছে। মিশকাত শরীফে হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত মুসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলার কাছে আরজ করলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন একটি দোয়া বলে দিন যার দ্বারা আমি আপনাকে স্মরণ করতে পারি। আল্লাহ তাআলার দরবার হতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু-এর কথা বলে দেওয়া হলো।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম আরজ করলেন, হে আল্লাহ! এই কালেমা তো আপনার সব বান্দাই পড়ে থাকে! আমি তো এমন একটি দোয়া বা জিকির চাই, যা শুধু আমার জন্য খাস হবে।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করলেন- হে মুসা! আমাকে ব্যতীত সাত আসমান ও এর আবাদকারী সব ফেরেশতা এবং সাত জমিনকে যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অপর পাল্লায় কালেমায়ে তায়্যেবাকে রাখা হয় তবে কালেমা তায়্যেবার পাল্লা ভারী হবে।
দ্বিতীয় কাজ- যা রমজান মাসে বেশি পরিমাণ করার জন্য হুকুম করা হয়েছে; তা হলো এস্তেগফার অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার কাছে গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া। বহু হাদিসে এস্তেগফারের অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।
এক হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি বেশি বেশি পরিমাণে এস্তেগফার পড়বে আল্লাহ তাআলা যেকোনো অভাব ও সংকটের সময় তার জন্য রাস্তা খুলে দিবেন, যেকোনো দুঃখ ও দুশ্চিন্তা দূর করে দিবেন এবং তার জন্য এমন রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।
আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘মানুষ মাত্রই গুনাহগার, তবে গুনাহগারদের মধ্যে উত্তম হলো ওই ব্যক্তি যে তওবা করতে থাকে।
এক হাদিসে আছে, মানুষ যখন গুনাহ করে তখন একটি কালো বিন্দু তার দিলের মধ্যে লেগে যায়। যদি সে ওই গুনাহ হতে তওবা করে তবে তা ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে যায়। নতুবা বাকি থেকে যায়।
অতঃপর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি জিনিস চাওয়ার জন্য হুকুম করেছেন, যে দুটি জিনিস ছাড়া কোনো উপায় নেই।
একটি হলো, জান্নাত পাওয়ার দোয়া করা। আর দ্বিতীয়টি হলো, জাহান্নাম হতে মুক্তি চাওয়া।
এই চার আমল উঠাবসা ও চলাফেরা সর্বাবস্থায় বেশি বেশি করব।
এ চার আমলকে একসঙ্গে সহজে এভাবে আদায় করতে পারি-
لَا اِلٰهَ اِلَّااللهُ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنَسْئَلُكَ الْجَنَّةَ وَنَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ.
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া নাসতাগফিরুকা, ওয়া নাসআলুকাল জান্নাতা, ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নার।
এই দোয়াটি আমরা মুখস্থ করে নিবো এবং বেশি বেশি পড়বো।এই দোয়াটি পড়লে উল্লিখিত চারটি আমলই আদায় হয়ে যায়।
লেখক: শিক্ষক, লেখক ও ধর্মীয় আলোচক