রফিক সাহেব আমার অতিপরিচিত মানুষ। প্রায়ই তার সঙ্গে আমার আড্ডা হয়। দ্বীনি বিষয়ে বিভিন্ন গল্প। তিনি ইদানিং প্র্যাকটিসিং মুসলিম হওয়ার চেষ্টা করছেন। ইসলাম চর্চা করেন। অন্যকে দেখে শেখার চেষ্টা করেন। আমি আলেম হওয়ায় আমাকেও জিজ্ঞেস করেন। 

সেদিনের কথা। রফিক সাহেবের সঙ্গে মসজিদে সাক্ষাৎ। তার হতবিহ্বল চেহারা দেখে কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে জানালেন, আজ নামাজে বড় ভুল করে ফেলেছেন। 

নামাজের জামাতে ইমাম সাহেব যখন রুকুতে যান তখন ভিন্ন খেয়ালে থাকার কারণে ভুলবশত কোনো তাসবিহ পড়তে পারেননি। এখন একজনকে নামাজ হবে কি না জিজ্ঞেস করেছেন, সে উত্তর দিয়েছে নামাজ হবে না। 

তার হতবিহ্বলতার কারণ হলো, তিনি আগেও এমন ভুল অনেকবার করেছেন। এতগুলো নামাজের এখন কী হবে?

আমি হেসে উঠলাম। রফিক সাহেবের সঙ্গে আজকেও আমার আরেকটা আড্ডা জমে উঠতে যাচ্ছে। 

তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, রুকু অথবা সেজদার তাসবিহ ছুটে যাওয়া আসলে নামাজ ভঙ্গকারী কোনো বিষয় নয়। হানাফি মাজহাবের গ্রহণযোগ্য মতানুসারে রুকু এবং সিজদায় তাসবিহ পাঠ করা সুন্নত। (রদ্দুল মুহতার ১/৪৯৪) 

আর সুন্নত তরক করলে নামাজ ভঙ্গ হয় না। তবে হ্যাঁ, সুন্নত তরক করার কারণে নামাজ মাকরূহ হবে। তবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে। পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন নেই। (রদ্দুল মুহতার ১/৪৯৫)

আমার এই কথা শোনার পর রফিক সাহেবের হতবিহ্বল চেহারা প্রসন্ন হয়ে উঠল।