Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

বিজ্ঞানের আলোকে সূরা ফিল

Icon

রেজা কারিম

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

বিজ্ঞানের আলোকে সূরা ফিল

সূরা ফিল পবিত্র কুরআনের ১০৫ তম সূরা। এটি একটি মাক্কি সূরা। এ সূরাতে জীববিজ্ঞানের দুটি শাখার বর্ণনা করা হয়েছে। 

জীববিজ্ঞানের(Biology) দুটি শাখা হলো-

১. প্রাণী বিজ্ঞান (Zoology) 

২. উদ্ভিদ বিজ্ঞান ( Botany) 

এ সূরা গবেষণা করলে অনেক নতুন তত্ব ও তথ্য পাওয়া সম্ভব বলে মনে করি। আমার সে জ্ঞান নেই। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের উচিত কুরআন নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা। আমি নিশ্চিত তারা এমনটি করতে পারলে আমাদের দেশ একদল চৌকষ বিজ্ঞানী পাবে। 

বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো গবেষণা তারা করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। তবে এ নতুনত্বের জন্য কুরআনের জ্ঞান দরকার। 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ওয়াল কুরআনিল হাকিম’- অর্থাৎ বিজ্ঞাময় কুরআনের শপথ। (সূরা ইয়াসিন) 

যেখানে মহান আল্লাহ কুরআনকে বিজ্ঞানময় বলে উল্লেখ করে তার শপথ করেছেন, সেখানে আমরা কেবল কুরআনকে একমুখী পদ্ধতিতে বর্ণনা করছি। সময় এসেছে এগিয়ে যাবার। মুসলিমরা একসময় জ্ঞান বিজ্ঞানে শুধু এগিয়ে ছিল তা নয় বরং তারা লিড করেছে।  

সূরা ফিলে দুটি প্রাণীর কথা বলা হয়েছে। একটি হাতি অন্যটি আবাবিল। যদিও আবাবিল শব্দটি নিয়ে দুটি মত রয়েছে। প্রথমত আবাবিল দ্বারা ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি বোঝানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত আবাবিল দ্বারা নির্দিষ্ট একটি পাখির নামকেই বোঝানো হয়েছে। 

এ সূরার ৫ম আয়াতে, চর্বিত তৃণের কথা বলা হয়েছে। আমরা অনেকেই গরুর জাবরকাটা দেখেছি। জাবরকাটার ফলে ঘাসের কেমন অবস্থা হয় তা আমরা জানি। ঠিক তেমনটিই হয়েছিল হস্তিবাহিনীর। এখান থেকে আমরা পরকালীন শিক্ষার পাশাপাশি ইহকালীন শিক্ষাও পেয়ে থাকি। 

এ সূরার ৪ নং আয়াতে পদার্থ বিজ্ঞানের আলোচনা করা হয়েছে। আবরাহার হস্তি বাহিনীর উপর পাখিদের পাথর নিক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এখানে আমরা পাথরের ভর, ভরবেগ ও গতি ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারি। 

ঠিক এভাবে রসায়ন বিজ্ঞানের রসদও এখান থেকে নিতে পারি। কুরআনের আলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বারা নতুন নতুন তথ্য-উপাত্ত বের হয়ে আসবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। 

উপর থেকে বোমা নিক্ষেপের ধারণা আবাবিল পাখিদের পাথর নিক্ষেপের ঘটনা থেকে মুসলিমরা নিয়ে এ বিষয়ে কাজ করতে পারতো। আমি জানি না, এ বিষয়ে মুসলমানদের গবেষণা কতটুকু আছে। এটি আমার জানার কমতি। 

যদিও অনেকেই বলে থাকে, উপর থেকে বোমা নিক্ষেপের ধারণা আবাবিল পাখিদের পাথর নিক্ষেপের ঘটনা থেকেই এসেছে। এটম বোমা বা পারমাণবিক বোমার ধারণাও এখান থেকেই এসেছে। যদিও এটি বেশিরভাগ মানুষই বিশ্বাস করবে না। কারণ এর কোনো প্রামান্য ভিত্তি নেই। শুধু গসিপ অন্তত পাশ্চাত্য বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা গ্রহণ করবে না। 

তবে এটিতো ঠিক যে, একটি ক্ষুদ্র জিনিসেরও যে বহুগুণ শক্তি থাকতে পারে তা সহজেই বোধগম্য হয়েছে এ সূরার শিক্ষা থেকে। 

আর এমনিতেও মহান আল্লাহর সৃষ্টি থেকেই বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত মানবসৃষ্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে চলেছেন। পাখি বা উড়নশীল প্রাণী থেকেই একসময় মানুষ ওড়ার কথা ভাবতো। যা একসময় বাস্তবে রূপ নিয়েছিলো। উড়োজাহাজ আবিষ্কার করে দুই রাইট ব্রাদার তা প্রমাণ করেছিলেন। 

অরবিল রাইট ও উইলবার রাইট তারাই ছিলেন প্রথম সফল উড়োজাহাজ নির্মাতা। যদিও এক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনে আলোচিত হযরত সুলায়মান আ. এর উড়ন্ত সিংহাসনের ঘটনা থেকেও মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছিল তা অনস্বীকার্য।  

সূরা ফিলের আরেকটি চমৎকার শিক্ষা হলো - ছোট প্রাণী দিয়ে বড় প্রাণীর দম্ভ বা অহংকার চূর্ণ করার শিক্ষা। এমনকি মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীকেও হতবুদ্ধি করার শিক্ষা। তাদের সচেতন করার শিক্ষা। শক্তি বা সাহস এবং জয়-পরাজয় কেবল আল্লাহ তায়ালার হাতে; এটাও অন্যতম শিক্ষা।  

উপরন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় সৃষ্টির সেরা মানুষও একটি ক্ষুদ্র প্রাণীর কাছে পর্যুদস্ত হতে পারে তার শিক্ষা আমরা এ সূরায় পেয়ে থাকি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম