আকিকার নিয়তে মানত পুরণ করা যাবে?
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
![আকিকার নিয়তে মানত পুরণ করা যাবে?](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/11/28/Untitled-6-674868ea75ee0.jpg)
প্রশ্ন: এক ব্যক্তি মানত করছিল সন্তান হলে মানুষ খাওয়াবে। এখন অনেকদিন হয়ে গেছে এই মানতের খাবার কি আকিকার নিয়তে খাওয়ালে হবে?
উত্তর: মানত শরিয়তে পছন্দনীয় নয়। শরিয়ত উদ্বুদ্ধ করে নফল সদকার প্রতি। মানতের প্রতি নয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- তোমরা দানের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবে। কেননা বিপদাপদ তাকে অতিক্রম করতে পারে না। (বাইহাকি- ৭৩৭৪)।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেছেন- রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন আমাদের মানত করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, মানত কোনো কিছুকে ফেরাতে পারে না। তবে মানতের মাধ্যমে কৃপণ ব্যক্তির সম্পদ বের করা হয়। (মুসলিম শরীফ, হাদিস নং- ৪৩২৫)।
তবে মানত করার পর তা থেকে ফেরার কোন সুযোগ নেই। তাই মানতকৃত ইবাদতটি পূরণ করা আবশ্যক।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা যেন নিজেদের মানত পূর্ণ করে- সূরা হজ-২৯
কাজেই প্রশ্নোক্ত মানত অবশ্যই পূর্ণ করতে হবে। একই পশুতে মানত এবং আকিকা আদায় হবে না।
আকিকা করা একটি স্বতন্ত্র সুন্নত।
আকিকা সম্পর্কে হাদিস শরিফে রয়েছে: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুরই আকিকা জরুরি।’ (আবু দাউদ: ২৮৪০; মুসনাদ আহমদ: ২০০৯৫)।
হজরত আলী বিন আবি তালেব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি ছাগল দিয়ে হাসানের আকিকা দিলেন।’ (তিরমিজি: ১৬০২; মুস্তাদরাকে হাকেম: ৭৫৮৯)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইহুদিরা পুত্রসন্তানের আকিকা করত কিন্তু কন্যাসন্তানের আকিকা করত না। তোমরা পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে হলেও আকিকা করো।’ (বায়হাকি, সুনানে কুবরা: ১৯৭৬০; মুসনাদ বাযযার: ৮৮৫৭)।
আকিকা করার উত্তম ও সুন্নত দিবস হলো সন্তান জন্মের সপ্তম দিন। সপ্তম দিনে আকিকা করতে না পারলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে আকিকা করবে। (তিরমিজি)।
যদি তা-ও সম্ভব না হয় তাহলে পরবর্তী সময়ে যেকোনো সময় আকিকা করা যাবে। তবে সপ্তাহের যে বারে বা যেই দিনে সন্তান জন্ম হয়েছে তার পূর্বদিনে করলে তা উত্তম হবে। বিশেষ কোনো কারণে এর ব্যতিক্রম হলেও অসুবিধা নেই।
অভাবের কারণে যদি কোনো ব্যক্তি তার সন্তান শিশু থাকতে আকিকা না করে থাকেন, ওই সন্তান বড় হওয়ার পর যদি তার সামর্থ্য হয়, তখন সে তার নিজের আকিকা করলেও সুন্নত আদায় হবে এবং তার পিতা-মাতাও এর সওয়াব পাবে।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) নবুওয়াত পাওয়ার পর নিজের আকিকা নিজে করেছেন।’ (বায়হাকি)।