কবর খনন ও দাফনের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি কী
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪৯ পিএম
প্রশ্ন: আমাদের সমাজে কবর খনন করার প্রচলিত পদ্ধতি এমন যে, লাশ চিত করে শোয়াতে হয়। শুধু চেহারাটা কিছুটা কেবলামুখী করার চেষ্টা করা হয়। আমার জানার বিষয়, কবর খনন করার সুন্নত তরীকা কী এবং কবরে লাশ রাখার সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি কী?
উত্তর: কবরে মায়্যেতকে শোয়ানোর প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি সঠিক নয়। চিত করে শুইয়ে শুধু চেহারা কেবলার দিকে করে দেওয়া মাসনূন পদ্ধতির পরিপন্থী।
এক্ষেত্রে সুন্নত নিয়ম হল, মায়্যেতকে কবরে সম্পূর্ণ ডান কাত করে কেবলামুখী করে শোয়ানো। আর তা নিশ্চিত করতে কবর খনন করতে হবে শরীয়ত ও সুন্নাহসম্মত পদ্ধতিতে।
শরীয়তে কবর খননের দুটি পদ্ধতি রয়েছে।
এক. প্রথমে চার কোণ বিশিষ্ট একটি গর্ত খনন করবে। যা লম্বায় মায়্যেতের দৈর্ঘ্য পরিমাণ হবে এবং চওড়ায় লম্বার অর্ধেক পরিমাণ। আর তা একজন মানুষের উচ্চতার সমান কিংবা অন্তত সীনা বরাবর গভীর করে খনন করা উত্তম। অবশ্য সর্বনিম্ন একজন মানুষের উচ্চতার অর্ধেক পরিমাণ গভীর করে খনন করার সুযোগ আছে।
এভাবে প্রথমে চার কোণ করে বড় একটি গর্ত খনন করার পর পশ্চিম দিকে ভেতরে আরেকটি গর্ত খনন করবে। যার উচ্চতা মায়্যেতের দুই কাঁধের প্রশস্ততার চেয়ে একটু বেশি হবে। এভাবে গর্তটি খনন করার পর মায়্যেতকে তাতে ডান কাত করে রেখে বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে ঐ গর্ত বন্ধ করে দেবে। এরপর বড় গর্তটি মাটি দ্বারা পূর্ণ করে দেবে। এ পদ্ধতিতে খনন করা কবরকে لحد (লাহ্দ) অনেক অঞ্চলে বুগলী কবর- বলা হয়।
দুই. পূর্বের নিয়মানুযায়ী প্রথমে চার কোণ বিশিষ্ট একটি বড় গর্ত খনন করে মাঝ বরাবর আরেকটি ছোট গর্ত খনন করবে। যার প্রশস্ততা হবে- মায়্যেতকে কেবলামুখী করে শোয়াতে যতটুকু প্রয়োজন হয় সে পরিমাণ আর গভীরতা হবে মায়্যেতের দুই কাঁধের প্রশস্ততার চেয়ে একটু বেশি।
এভাবে গর্ত খনন করার পর মায়্যেতকে তাতে রেখে উপরে বাঁশ ইত্যাদি বিছিয়ে দেবে। তারপর পুরো গর্ত মাটি দ্বারা ভরাট করে দেবে। এ পদ্ধতিতে খনন করা কবরকে شق (শাক্ক) -কোনো কোনো অঞ্চলে সিন্দুক কবর- বলা হয়।
যেসব জায়গার মাটি শক্ত ও মজবুত, সেখানে লাহ্দ তথা বুগলী কবর খনন করাই উত্তম। তবে যেসব জায়গার মাটি নরম সেখানে সিন্দুক কবর খনন করবে।
সূত্র: সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৬৬; সুনানে নাসায়ী, হাদিস ২১৩৭; মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, বর্ণনা ৬০৬০, আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬১; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬২২; জামিউর রুমুয ১/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৪