আশুরার রোজায় মুছে যায় এক বছরের পাপ
মুহাম্মদ এনায়েত কবীর
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম
আরবি সনের প্রথম মাস মুহাররম। মুহাররমের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। এই দিন বছরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। পাপ মুক্তি ও ক্ষমার বার্তা নিয়ে আসে আশুরা। আশুরার রোজায় রয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে এই রোজার ওসিলায় আল্লাহ তাআলা রোজাদারের বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-১১৬২)
রমজানের পর সবচেয়ে ফজিলতের রোজা হলো আশুরার রোজা। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। এখন তা নফল। তবে ফজিলতের দিক থেকে এই রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি নবীজিকে রমজান ও আশুরার মতো গুরুত্ব দিয়ে অন্য কোনো রোজা রাখতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১/২১৮)
কিছু আমল আছে যেগুলো নবীজি কখনো ছাড়েননি। সেই আমলগুলোর একটি হলো আশুরার রোজা। হজরত হাফসা (রা.) বলেন, নবীজি কখনো চারটি আমল ছাড়তেন না। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতিমাসের তিনটি রোজা এবং ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৬৩৩৯)
কুরআনের পরীক্ষিত কবুল হওয়া ৩টি দোয়া
আশুরার রোজা সম্পর্কে নবীজি বলেন, রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মুহাররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পরে সর্বোত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। (সহিহ মুসলিম ১/৩৫৮)
এক ব্যক্তি হজরত আলীর (রা.) কাছে জানতে চাইলেন যে, রমজানের পর আর কোন মাসে আপনি রোজা রাখার আদেশ করেন? হজরত আলী (রা.) বললেন, আমার সামনে একজন সাহাবী প্রিয় নবীজিকে এই প্রশ্নই করেছিলেন। তখন নবীজি বলেছিলেন ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মুহাররম মাসে রাখ। কারণ এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস: ১/১৫৭)
আশুরার রোজা কয়টি? হাদিসে পাকেই আছে এর পরিষ্কার উত্তর। নবীজি ইরশাদ করেন, তোমরা আশুরার দিন এবং আশুরার আগের দিন কিংবা পরের দিন আরো একটি রোজা রাখো । অর্থাৎ আশুরার রোজা দুইটি। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং-২১৫৪)
আমাদের দেশে এ বছর ১৭ জুলাই বুধবার পবিত্র আশুরা। তাই আশুরার রোজা রাখতে চাইলে ১৭ জুলাই বুধবার এবং এর আগের দিন অথবা পরেরদিনসহ মোট দুইটি রোজা রাখতে পারেন। পাপের বিষে বিষাক্ত আমাদের জীবন।
আশুরা রোজার মাধ্যমে শুরু হোক পাপমুক্ত নতুন জীবনের পথচলা।
শিক্ষক: শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা, হাতিরঝিল, ঢাকা-১২১৯
হিজরি নববর্ষ শুরু হয়েছিল যেভাবে