মৌমাছি নিয়ে কুরআনে যে সুরা অবতীর্ণ হয়েছে
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৭:১২ পিএম
বৈচিত্র্যময় এ সৃষ্টি জগতের ক্ষুদ্র প্রাণী হিসেবে কীটপতঙ্গকেই বোঝানো হয়। যদিও আকারে এরা ক্ষুদ্র, কিন্তু মানুষের উপকারে এদের অবদান অনেক। এ কীটপতঙ্গরাই দিনরাত মানুষের সেবা করে যাচ্ছে রাব্বুল আলামিনের হুকুমের দাস হয়ে। হোক তা ক্ষুদ্র পিঁপড়া, মশা, মাছি, মৌমাছি বা অন্য কোনো পোকামাকড়। তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে অসামান্য অবদান।
তাই তো রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বিশাল সাগর, পাহাড়ের বর্ণনা যেমন দিয়েছেন, তেমনি ক্ষুদ্র পিঁপড়া বা মশা-মাছিরও। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহপাক মাছি কিংবা তার চেয়েও ছোট কোনো কিছুর উপমা দিতে লজ্জা করেন না।’ (সুরা বাকারা : ২৬)
নাহল অর্থ ‘মৌমাছি’। পবিত্র কুরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সুরাই অবতীর্ণ হয়েছে।
সুরাটির ৬৮-৬৯ আয়াতে মৌমাছির কথা রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তোমার প্রতিপালক মৌমাছির অন্তরে এই নির্দেশ সঞ্চার করেন যে, পাহাড়ে, গাছে এবং মানুষ যে মাচান তৈরি করে তাতে নিজ ঘর তৈরি কর। তারপর সব রকম ফল থেকে নিজ খাদ্য আহরণ কর। তারপর তোমার প্রতিপালক তোমার জন্য যে পথ সহজ করে দিয়েছেন, সেই পথে চল। (এভাবে) তার পেট থেকে বিভিন্ন বর্ণের পানীয় বের হয়, যার ভেতর মানুষের জন্য আছে শেফা। নিশ্চয়ই এসবের মধ্যে নিদর্শন আছে সেই সকল লোকের জন্য, যারা চিন্তা-ভাবনা করে।
মৌমাছি বা মধুমক্ষিকা নামের এ ক্ষুদ্র প্রাণীটি পিঁপড়ারই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। এরা মধু ও মোম উৎপাদনীয় উপাকারী পতঙ্গ। পৃথিবীতে প্রায় বিশ হাজার প্রজাতির মৌমাছি লাখ লাখ বছর ধরে টিকে রয়েছে। এরা উদ্ভিদের পরাগায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মৌমাছির রয়েছে ১৭০টি ঘ্রাণ সংবেদী ইন্দ্রিয়; যা দিয়ে এরা অনেক দূর থেকেও নির্দিষ্ট ফুলের ঘ্রাণ পায়।
মৌমাছি কঠোর পরিশ্রমী একটি প্রাণী। একটি বড় চাকের মধু সংগ্রহ করতে গড় হিসাবে সব মৌমাছি প্রায় নব্বই হাজার মাইল পথ পাড়ি দেয়। এ নব্বই হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে তারা মানুষের জন্য মধু সংগ্রহ করে।
মধুকে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘ফিহি শিফাউল লিন্নাস’ তথা মানবজাতির মহৌষধ।
‘হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি লোক রাসুলুল্লাহর (সা.) কাছে এসে বলল, ‘আমার ভাইয়ের খুব পায়খানা হচ্ছে।’ তিনি বললেন, ‘তাকে মধু পান করিয়ে দাও। সে গেল এবং তাকে মধু পান করাল। আবার সে এলো এবং বলল (এভাবে দু’বার) পুনরায় এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তার পায়খানা তো আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বললেন, আল্লাহ সত্যবাদী এবং তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী। সে গেল এবং তাকে মধু পান করাল। এবার সে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করল।’ (বুখারি : ৫/২৯১, মুসলিম, তিরমিজি : ৬০৭/ ২০২৩)।