★ সহায় সম্বল না থাকলেও সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাক
সুরা আরাফের ১১০-১০২ নম্বর আয়াতে এই সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, আল্লাহতায়ালার সাহায্য সবসময় সত্যের সঙ্গে থাকে। সত্যের পক্ষে হোক না একজন বিজয় আসবেই।
ফেরাউন হজরত মুসাকে (আ.) জাদুকর মনে করে তার রাজ্যের বড় বড় জাদুকরদের বিরুদ্ধে জাদু প্রদর্শনের আহ্বান জানাল।
জাদুকররা ভেলকিবাজির আশ্রয় নিলে তাদের রশিগুলো সাপের মতো দেখাতে লাগল। হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর হুকুমে নিজের লাঠি জমিনে ফেললে তা সাপ হয়ে বাকি সব খেয়ে ফেলল। সত্যের বিজয় হলো আর জাদুকররা সেজদায় লুটিয়ে পড়ে ইমান আনল। এ জন্য আমাদের সবসময় সত্যের ওপর অবিচল থাকা উচিত।
★ আল্লাহর ভয় ও জাকাত প্রদান মুমিনের জন্য রহমত স্বরূপ
সুরা আরাফের ১৫৬ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, তিনি (আল্লাহ) বললেন: যাকে ইচ্ছা আমি আমার শাস্তি দিয়ে থাকি, আর আমার করুণা ও দয়া প্রতিটি জিনিসকেই পরিব্যপ্ত করে রয়েছে। সুতরাং আমি তাদের জন্যই কল্যাণ অবধারিত করব, যারা পাপাচার হতে বিরত থাকে, জাকাত দেয় এবং আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি ইমান আনে।
★শরিয়তের ওপর আমলকারীর জন্যই রয়েছে সফলতা
আল্লাহ সুরা আরাফের ১৫৭ নম্বর আয়াতে বলেন, যারা সেই উম্মী রাসুলের অনুসরণ করে যার কথা তাদের নিকট সংরক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জিল কিতাবে লিখিত পায়, যে মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ করতে নিষেধ করে, আর সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে এবং অপবিত্র বস্তু হারাম করে, আর তাদের ওপর চাপানো বোঝা হতে তাদের মুক্ত করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ইমান রাখে, তাকে সম্মান করে এবং সাহায্য করে ও সহানুভূতি প্রকাশ করে, আর সেই নূরকে অনুসরণ করে যা তার সঙ্গে অবতীর্ণ করা হয়েছে, তারাই সফলকাম।
★ সব মানুষ আল্লাহর একাত্ববাদ স্বীকার করেছে
সুরা আরাফের ১৭২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, যখন তোমার রব আদম সন্তানের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে তাদের ওপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?
তারা সমস্বরে উত্তর দিল: ‘হ্যাঁ! অবশ্যই আমরা সাক্ষী থাকলাম।’ (এটা এ জন্য যে) তোমরা যেন কিয়ামতের দিন বলতে না পার, ‘‘আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলাম।’’
★ কুরআন শরিফ চুপচাপ মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত
আল্লাহ সুরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলেন, যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সঙ্গে তা শ্রবণ করবে এবং নীরব হয়ে থাকবে, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।
★ সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর জিকির কর
সুরা আরাফের ২০৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, তোমার রবকে মনে মনে সবিনয়ে বিনীতভাবে অনুচ্চস্বরে সকাল-সন্ধ্যায় স্মরণ করবে এবং তুমি উদাসীন হবে না।
★ আল্লাহ ও রাসুলের পরিপূর্ণ আনুগত্য ইমানের আলামত
সুরা আনফালের ০১ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক সঠিক রূপে গড়ে নাও, আর যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তা হলে আল্লাহ এবং তার রাসুলের আনুগত্য কর।
★ আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরণ থেকে বিমুখ হওয়া কাম্য নয়
সুরা আনফালের ২০, ২১ ও ২২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর। তোমরা যখন তার কথা শুনছ, তখন তোমরা তার আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নিও না।
তোমরা ওইসব লোকের মতো হও না, যারা বলে— আমরা আপনার কথা শুনলাম, কার্যত তারা কিছুই শোনে না। আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে ওইসব মূক ও বধির লোক, যারা কিছুই বোঝে না (অর্থাৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না)।
★ আমানতের খেয়ানত কর না
সুরা আনফালের ২৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, হে মু’মিনগণ! তোমরা জেনেশুনে আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কর না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানত সম্পর্কেও বিশ্বাস ভঙ্গ কর না।
★তাকওয়ার (আল্লাহর ভয়) পুরস্কার
সুরা আনফালের ২৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তা হলে তিনি তোমাদের ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার একটি মান নির্ণয়ের শক্তি দান করবেন, আর তোমাদের দোষত্রুটি তোমাদের হতে দূর করবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন, আল্লাহপাক বড়ই অনুগ্রহশীল।
দ্বীনিয়াত বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগ থেকে অনূদিত