
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
অক্সফোর্ডে ভাষণের সময় মমতাকে হেনস্থা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম

আরও পড়ুন
অনেক উৎসাহ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডন সফরে গিয়েছেন। প্রথম কয়েকদিনের শিল্প আলোচনা ভালো হলেও সুর কাটল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজে ভাষণ দেওয়ার সময়। বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাকে। হেনস্থার শিকার হতে হয়। অবশ্য সেই বিক্ষোভ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজ মমতাকে বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। বিষয় ছিল ‘সামাজিক উন্নয়ন: নারী, শিশু ও প্রান্তিক অংশের উন্নয়ন’। মমতা তার ভাষণে রাজ্যে বিনিয়োগের প্রসঙ্গ উত্থাপন করার সময় দর্শাকাসনে বিক্ষুব্ধ কলরবের আকার নেয়। দর্শকাসন থেকে প্রশ্নের পর প্রশ্ন ধেয়ে আসে আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক হত্যা, ভোট পরবর্তী হিংসা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার সময় বিক্ষোভকারীরা চিৎকার করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করেন। দর্শকাসনের পেছন থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্টার তুলে ধরা হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই শান্ত, কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠে বিক্ষোভ মোকাবিলা করেন।
বিক্ষোভকারীরা আরজি কর ধর্ষণ মামলার প্রসঙ্গ তুললে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, আরেকটু জোরে কথা বলো, আমি তোমাকে শুনতে পারছি না। তোমার যা বলার আছে আমি সব শুনব। তুমি কি জানো যে এই মামলা বিচারাধীন? এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে, মামলাটি আর আমাদের হাতে নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, এখানে রাজনীতি করো না, এটা রাজনীতির মঞ্চ নয়। আমার রাজ্যে যাও এবং আমার সঙ্গে রাজনীতি করো।
এরপর বিক্ষোভকারীরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের একজনকে ভাই বলে সম্বোধন করে বলেন, মিথ্যা বলো না। তোমার প্রতি আমার সহানুভূতি আছে। কিন্তু এটাকে রাজনীতির মঞ্চ বানানোর পরিবর্তে, বাংলায় (পশ্চিমবঙ্গে) যাও এবং তোমার দলকে বলো যেন নিজেকে শক্তিশালী করে যাতে তারা আমাদের সঙ্গে লড়াই করতে পারে।
এরপর বিক্ষোভকারীরা তাদের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাদের পাল্টা বলেন, ‘আমাকে অপমান করে তোমাদের প্রতিষ্ঠানকে অসম্মান করো না। আমি এখানে দেশের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছি। তোমাদের দেশকে তোমরা অপমান করো না।’ কিছুক্ষণ পরে অবশ্য দর্শকদের আপত্তিতে বিক্ষোভকারীরা বেরিয়ে যান।
অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, যারা বিক্ষোভ করেছেন, তারা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বা গবেষক নন। সকলেই বহিরাগত। কর্তৃপক্ষের তরফে গোটা ঘটনার জন্য বারংবার মমতার কাছে দুঃখপ্রকাশও করা হয়।
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এ বিক্ষোভের জন্য বামপন্থীদের দিকে আঙ্গুল তুলেছে।