
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
ডব্লিউটিওতে আর্থিক সহায়তা বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১১:০৭ এএম

আরও পড়ুন
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনটি সূত্র ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি ব্যয়ে কাঁটছাটের জন্য এমনটি করা হয়েছে।
দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসেই সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ডোনাল্ড
ট্রাম্প। বেশিরভাগ বৈশ্বিক সংস্থায় সহায়তা
বন্ধ করে দিয়েছে তারা। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পলিসিতে হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন।
রয়টার্স বলছে, ডব্লিউটিওর কার্যক্রমে এবারই প্রথমবারের মতো বাধা দেয়নি
ট্রাম্প প্রশাসন। ২০১৯ সালে বৈশ্বিক সংস্থাটির বিচারক নিয়োগে বাধা দিয়েছিল তারা। এর
ফলে বিরোধ নিষ্পত্তিতে ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল ডব্লিউটিওকে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, ডব্লিউটিওর
বিচারিক সংস্থা বাণিজ্য বিরোধকে অতিরঞ্জিত করে ফেলে।
জেনেভাভিত্তিক বাণিজ্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ডব্লিউটিওর ২০২৪ সালে বার্ষিক
বাজেট ছিল ২০৫ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক (সুইজারল্যান্ডের মুদ্রা) বা ২৩২ দশমিক শূন্য ছয়
মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ডব্লিউটিওর তথ্যানুযায়ী, বিশ্ব বাণিজ্যে নিজের অংশের সমানুপাতিক
ফি ব্যবস্থার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এর প্রায় ১১ শতাংশ দেবে।
গত ৪ মার্চ ডব্লিউটিওর বাজেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় একজন মার্কিন প্রতিনিধি জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে অবদানের পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বাজেটে তাদের অর্থ প্রদান স্থগিত রাখা হয়েছে। ওই বৈঠকের সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেন, কবে নাগাদ পর্যালোচনা শেষ হবে তা নিয়ে ওই মার্কিন প্রতিনিধি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
তৃতীয় সূত্রটি রয়াটর্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বন্ধের
জেরে ডব্লিউটিও প্ল্যান বি-তে হাঁটবে।
বাজেট সভাটি গোপন হওয়ায় সূত্রগুলো তাদের পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক। এমনকি,
যুক্তরাষ্ট্রও বিষয়টি নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের
মন্তব্যের জন্য রয়টার্স থেকে যোগাযোগ করা হলেও তারা এতে সাড়া দেয়নি।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, গত মাসে ট্রাম্প নির্বাহী
আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মার্কিন স্বার্থের পরিপন্থি কিনা তা
যাছাইয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে ১৮০ দিনের সময় দিয়েছেন ট্রাম্প। ওই মুখপাত্র
বলেন, ‘ডব্লিউটিওসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়টি বর্তমানে পর্যালোচনায় আছে।’
বিষয়টি নিয়ে ডব্লিউটিওর মুখপাত্র ইসমালিয়া দিয়েঞ্জ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের
বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সব ধরণের অর্থ প্রদান স্থগিত হওয়ার কারণে
এটিও আটকা পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত, বকেয়া ডব্লিউটিওর কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে
পারে। আর্থিক বরাদ্দ বন্ধের কারণে উদ্ভূত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এটি কিভাবে পরিচালনা করা
যায় সেই সক্ষমতা অর্জনের পরিকল্পনাও রয়েছে।’
ডব্লিউটিওর নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া
ছিল ২৫ দশমিক ৭০ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক বা ২২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৈশ্বিক সংস্থার আইন অনুযায়ী, কোনো সদস্য যদি নিজের এক বছরের বকেয়া পরিশোধে
ব্যর্থ হয় তাহলে অভিযুক্ত সদস্য দেশকে শ্রেণিভুক্ত করে কয়েক ধাপে দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর
ব্যবস্থা নেবে ডব্লিউটিও। যুক্তরাষ্ট্রকে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে কিনা তা সম্পর্কে ওই
তিনটি সূত্র কিছুই জানাতে পারেনি।