Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে নতি স্বীকার, ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম

ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে নতি স্বীকার, ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইলের গাজা হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, বহুবছরের জন্য স্থগিতাদেশ ও ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এপি নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শিক্ষার্থী সংগঠকদের দাবি, কমপক্ষে ২২ জন শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে স্টুডেন্ট ওয়ার্কার্স অব কলাম্বিয়া (এসডব্লিউসি) ইউনিয়নের সভাপতি গ্রান্ট মাইনারকেও বহিষ্কার ও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যা তার চুক্তি নবায়নের আলোচনার ঠিক আগে ঘটে। এসডব্লিউসি এই সিদ্ধান্তকে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে এবং দাবি করেছে যে, এটি গাজায় যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দমনের অংশ।

এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাকস্বাধীনতা দমনের বৃহত্তর নীতির অংশ, এসডব্লিউসি তাদের বিবৃতিতে জানায়। এটি এমন এক সময়ে করা হলো, যখন ফেডারেল সরকার কলাম্বিয়ার অর্থায়ন স্থগিত করেছে এবং আরও ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল বাতিলের হুমকি দিয়েছে।"

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— গত বছরের হ্যামিল্টন হলের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেওয়া, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য মুখোশ পরা নিষিদ্ধ করা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশীয় ও আফ্রিকান স্টাডিজ বিভাগ পুনর্গঠন করা এবং ইহুদিবিদ্বেষ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক জোটের (আইএইচআরএ) সংজ্ঞা গ্রহণ করা।

সমালোচকদের মতে, আইএইচআরএ-এর সংজ্ঞা গ্রহণের ফলে ইসরাইলবিরোধী সমালোচনা দমন করা হবে এবং একাডেমিক স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সংস্থাটির সংজ্ঞার ১১টি উদাহরণের মধ্যে সাতটি ইসরাইলবিরোধিতাকে ইহুদিবিদ্বেষের সঙ্গে এক করে দেখে, যা বাকস্বাধীনতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি সংজ্ঞাটির রচয়িতা কেনেথ স্টার্নও একে সমালোচনা করেছেন।

কলাম্বিয়ার শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে, এই সংজ্ঞার উদাহরণগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করে দেবে এবং তারা ইসরাইলের নীতির সমালোচনা করতে গেলে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।

এদিকে, ফিলিস্তিনি আন্দোলনকর্মী ও শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে আটক করার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি অনুসন্ধানী অভিযান পরিচালনা করেছে।

কলাম্বিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ক্যাটরিনা আর্মস্ট্রং এক ইমেইলে জানিয়েছেন, আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আজ রাতে ডিএইচএস-এর ফেডারেল এজেন্টরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে অভিযান চালিয়েছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি।

তিনি আরও জানান, ডিএইচএস বিশ্ববিদ্যালয়কে দুটি আদালতের পরোয়ানা দেখিয়েছে, যা ফেডারেল বিচারক কর্তৃক স্বাক্ষরিত, এবং যা তাদের ছাত্রদের নির্দিষ্ট কক্ষ তল্লাশি করার অনুমতি দেয়।

যদিও কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়নি, আর্মস্ট্রং বলেন, আমরা আইনের শাসন মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আশা করি, শহর, রাজ্য ও ফেডারেল সংস্থাগুলোও একই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করবে।

ফেডারেল সরকার, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম