গাজা ইস্যু: আরব লীগের পাল্টা প্রস্তাবকে সমর্থন দিল ওআইসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৫ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আরব লীগের পাল্টা প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জেদ্দায় এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেন।
ওআইসির মহাসচিব হুসেইন ইব্রাহিম ত্বহা আরব লীগের অনুমোদিত প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান, যা মিশরের উদ্যোগের ওপর ভিত্তি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনের অধীনে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে পুনর্নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসির মহাসচিব গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন, যা আরব সম্মেলনে অনুমোদিত হয়েছে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের নিজ ভূমিতে থাকার অধিকারকে নিশ্চিত করে।
গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনাকে আরব-ইসলামী পরিকল্পনায় রূপান্তরের আহ্বান
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তি, যার দেশ হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে, ওআইসির সমর্থন চেয়েছেন যাতে পরিকল্পনাটি কেবল আরব বিশ্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং এটি একটি আরব ও ইসলামী পরিকল্পনায় পরিণত হয়।
পাকিস্তানি কূটনীতিক, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছেন, এই বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য হলো আরব পরিকল্পনার অনুমোদন, যা গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি কাঠামোবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করবে।
বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, বিশেষ করে ইসরাইলের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে রমজান মাসে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের তীব্র নিন্দা
এদিকে, পাকিস্তান রমজান মাসে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের ইসরাইলি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি এই সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং সম্মিলিত শাস্তির একটি রূপ বলে অভিহিত করেছে।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তান সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছে ইসরাইলের এই সিদ্ধান্তের, যা গাজার লাখো বিপদগ্রস্ত ফিলিস্তিনির জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়ার অংশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনারই অংশ, যেখানে ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটি চলমান যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকেও বিপদের মুখে ফেলতে পারে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবিলম্বে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে এবং গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দমন-পীড়নের জন্য দেশটিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
ইসরাইলের সাম্প্রতিক অবরোধের ফলে গাজায় মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর তীব্র সংকটের বিষয়ে সতর্ক করেছে, যা ক্রমাগত সহিংসতার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।