ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পূরণ করতে পারবে ইউরোপ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
-67c9428377b51.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিলেও এবার তা স্থগিত করে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করে দেওয়ায় এই যুদ্ধে ইউক্রেনের জয় নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে ইউক্রেনীয়রা। দেশটি এখন তাকিয়ে ইউরোপের দিকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পূরণ করতে পারবে ইউরোপ?
ইউক্রেনে সব ধরণের সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, ‘তাদের এই পদক্ষেপের লক্ষ্য, সকল পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনা বাধ্য করা।’ যদিও ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পরপরই রুশ ড্রোনগুলো দক্ষিণে ওডেসা এবং উত্তর-পূর্বের সুমিকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
এ ব্যাপারে ইউক্রেনের আইনপ্রণেতারা বলেন, ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের পরিণতি হবে ভয়াবহ।
ইউরোপীয় নেতারা বলেছেন, কিয়েভে অস্ত্রের চালান অব্যাহত রাখা অত্যাবশ্যক। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপ এই ঘাটতি পূরণ করতে পারবে কিনা এবং ইউক্রেন কতদিন লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইউরোপ কি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার ঘাটতি পূরণ করতে পারবে?
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মায়াক ইন্টেলিজেন্সের নির্বাহী পরিচালক এবং রাশিয়ার সামরিক ইতিহাস বিষয়ক বই ‘ফোর্জড ইন ওয়ার’ বইয়ের লেখক মার্ক গালিওত্তি বলেন, ‘ইউরোপ যা করতে পারে তার নির্দিষ্ট একটি সীমা রয়েছে।’
গালিওত্তি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, ‘প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে আব্রামস ট্যাংক এবং ব্র্যাডলি কর্মী বাহকগুলোর খুচরা যন্ত্রাংশ পর্যন্ত যেগুলো ইউক্রেনীয়রা ব্যবহার করছে সেগুলোর নির্দিষ্ট কিছু সিস্টেম রয়েছে। ইউরোপীয়দের সেগুলো পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো খোলা বাজার থেকে এগুলো কেনা। কিন্তু এর জন্য সময় লাগবে।’ তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালে খোলা বাজারে অর্ডার করা কিছু অস্ত্র এখন ইউক্রেনে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, সামরিক সহায়তা বন্ধের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘সমাধান ত্বরান্বিত করা।’ যদিও ইউরোপ ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে।
রোববার ইইউ ও ইউক্রেনের নেতাদের এক বৈঠকের আয়োজনের পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেন, ‘ইচ্ছুকদের একটি জোট’ কিয়েভকে সমর্থন করা অব্যাহত রাখতে চাইবে।
জেলেনস্কির আবেদন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার বলেছেন তার দেশ ‘যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করতে রাজি এবং শান্তি চুক্তিতে পৌঁছতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শক্তিশালী নেতৃত্বের’ আওতায় তারা কাজ করবে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সাথে তার আলোচনা ‘যেভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেভাবে হয়নি। এখন এটা শুধরানোর সময়। আমরা চাই আগামীতে সহযোগিতা এবং যোগাযোগ গঠনমূলক হবে।’
‘শান্তির প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকারের কথা আমি আবার বলতে চাই,’ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন। ‘অন্তহীন যুদ্ধ কেউ চায় না। দীর্ঘ মেয়াদী শান্তির জন্য ইউক্রেন যথাশীঘ্র আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ইউক্রেন অন্য সবার চাইতে বেশি করে শান্তি চাইছে।’