হামাসের বিবৃতি, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে শনিবার। হামাস জানিয়েছে, স্থিতিশীলতা ও বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পূর্ণ বাস্তবায়ন দেখতে চায় তারা। এজন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের ওপর জোর দিচ্ছে গোষ্ঠীটি।
হামাস নেতা মাহমুদ মারদাওই এক বিবৃতিতে বলেন, এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হলো চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন, যা দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন দিয়ে শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির চুক্তির পর হামাস চায় পুরো চুক্তি বাস্তবায়িত হোক এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের শুরুতেই বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া চলুক। সেজন্য, হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায় বাস্তবায়নের দাবি জোরালো করা হয়েছে।
এদিকে যদিও ইসরাইল প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে হামাস স্পষ্টভাবে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে, তারা কেবল তখনই শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে যদি দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনাগুলো শুরু হয় এবং সম্মতি দেওয়া হয়।
হামাসের দাবি, প্রথম পর্যায়ে ইসরাইল চুক্তির শর্তাবলী পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ের শর্তগুলো যথাযথভাবে পূর্ণ না হলে চুক্তি স্থিতিশীল হবে না এবং বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া সামনে আসবে না।
যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার গতি অনেকটা ধীর। হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড, শনিবার গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মিদের নিয়ে একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। এমন সময়ে গোষ্ঠীটি জিম্মিদের ভিডিও সামনে এনেছে, যখন ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব শেষ হতে যাচ্ছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
রোববার টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ৪২ দিনের প্রথম যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইল নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সাময়িক যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব দিয়েছেন।
উইটকফের প্রস্তাব অনুযায়ী, রমজান এবং ইহুদিদের বসন্তকালীন উৎসবের (পাসওভার নামে পরিচিত) মধ্য দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা করা লক্ষ্য।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি আরও এক মাস বাড়ানোর মাধ্যমে, সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রতিবেদনটির দাবি, হামাস এখনও এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি, এবং তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকলে যুদ্ধ পুনরায় শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। হামাস বারবার বলে এসেছে, তারা ক্ষণস্থায়ী নয় বরং স্থায়ীভাবে পূর্ণ চুক্তি বাস্তবায়ন চায়।
ইসরাইল, কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা কায়রোতে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করছেন। হামাস এই আলোচনায় উপস্থিত হয়নি, তবে তার অবস্থান মিশরীয় এবং কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাঈম এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার ইসরাইলি আলোচকরা দেশে ফিরে যাওয়ার আগে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এটি স্পষ্ট নয় যে, ওই মধ্যস্থতাকারীরা শনিবার কায়রোতে ফিরে আলোচনাগুলো পুনরায় শুরু করবেন কি না। নাঈম বলেন, তিনি জানেন না কখন আলোচনা পুনরায় শুরু হতে পারে।