‘মহাকুম্ভে হাজারো মৃত্যু’, যা বললেন মল্লিকার্জুন খাড়গে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম
ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলায় ‘হাজারো মৃত্যু’র ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে সোমবার রাজ্যসভায় তার সেই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে শর্ত জুড়ে দিয়েছেন বিরোধী দলীয় এই নেতা।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে গত ২৯ জানুয়ারি মহাকুম্ভের অমৃত স্নান বা মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে পদদলিত হয়ে ৩০ জন নিহত এবং অন্তত ৬০ জন আহত হন বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে।
প্রশাসনের মতে, বিশাল জনসমাগমের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে এবং সেখান থেকেই পদদলনের ঘটনা ঘটে।
রাজ্যসভায় এদিন মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আমি মহাকুম্ভে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই... যারা সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সংখ্যা হাজারও হতে পারে’।
সরকারি পরিসংখ্যান না মেনে নিজের অনুমানের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করার কারণে শাসকদলের সদস্যরা এ সময় তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
প্রতিবাদের মুখে খাড়গে বলেন, ‘এটি আমার অনুমান। যদি এটি ভুল হয়, তাহলে সরকার সত্যিকারের সংখ্যা জানানো উচিত। আমি কাউকে দোষ দেওয়ার জন্য ‘হাজারো মৃত্যু’ বলিনি। তবে কতজন মারা গেছেন, সেই তথ্য অন্তত প্রকাশ করা হোক। যদি আমার বলা সংখ্যা ভুল হয়, তবে আমি ক্ষমা চাইতে রাজি আছি। কিন্তু আগে সরকারকে জানাতে হবে, আসল সংখ্যাটা কত? কতজন নিখোঁজ?’
এদিকে রাজ্যসভার স্পিকার জগদীপ ধনখড় বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা এমন একটি সংখ্যা উল্লেখ করেছেন, যা সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এই সংসদ থেকে যে বার্তা যায়, তা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এমন অনুমান করা কি উচিত? আমি আপনার কাছে আবেদন জানাই, আপনার বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন’।
তবে বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশ সরকার মহাকুম্ভে ভিড় নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার বসন্ত পঞ্চমীর শুভ লগ্নে মহাকুম্ভে তৃতীয় অমৃত স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং লাখ লাখ ভক্ত ত্রিবেণী সঙ্গমে পবিত্র স্নান করছেন। প্রশাসনের আশা, দিনের শেষে তিন কোটির বেশি মানুষ গঙ্গাস্নান করবেন।
ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ভোর সাড়ে ৩টা থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া ৭৭ জন নারীসহ ২৭০ জন প্রশিক্ষণরত আইপিএস অফিসারকে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সহায়তা করতে প্রয়াগরাজে আনা হয়েছে। প্রধান স্নানের দিনগুলোতে ভিআইপি যাতায়াত সীমিত রাখা হয়েছে, যাতে অতিরিক্ত ভিড় সৃষ্টি না হয়।
সেই সঙ্গে সাধারণ ভক্তদের উৎসাহিত করা হয়েছে, যাতে তারা নির্দিষ্ট কোনো ঘাটে না ভিড় করে এবং যেকোনো ঘাটে গিয়ে স্নান করে। যাতে পদদলনের মতো ঘটনা এড়ানো যায়। সূত্র: এনডিটিভি