পাকিস্তানি তরুণের প্রেমে পড়ে বিপাকে মার্কিন নারী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০০ পিএম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তানি এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক মার্কিন নারীর। বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি নিউইয়র্ক থেকে করাচিতে আসেন। তবে পারিবারিক চাপে তরুণ তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এলে বিপদে পড়েন ওই নারী। একপর্যায়ে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিজ দেশে ফিরতে না পেরে পাকিস্তানে আটকে পড়েন তিনি।
পাকিস্তানের জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৩ বছর বয়সি মার্কিন নাগরিক অনিজাহ অ্যান্ড্রু রবার্টসনের সঙ্গে ১৯ বছর বয়সী পাকিস্তানি তরুণ নিদাল আহমেদ মেননের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গেল বছরের ১১ অক্টোবর তিনি পর্যটক ভিসায় পাকিস্তানে এসেছিলেন, যা ৩০ দিনের জন্য বৈধ ছিল। তবে পাকিস্তানে সেই তরুণের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে গিয়ে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। যার ফলে তিনি পাকিস্তানে আটকে পড়েন।
জানা গেছে, পাকিস্তানি প্রেমিক নিদাল আহমেদ মেননের বাড়ি করাচির গার্ডেন ওয়েস্ট এলাকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে এই তরুণ রবার্টসনকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি পাকিস্তানে আসেন। তবে পরবর্তীতে তরুণ নিদাল তার পরিবারের চাপের কারণে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে, যার ফলে রবার্টসন পাকিস্তানে আটকে পড়েন।
এরপর দেশে ফেরার জন্য তিনি পাকিস্তানের একটি বিমানবন্দরে যান। তবে বৈধ টিকিট না থাকার কারণে তাকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাহিনী টার্মিনালে প্রবেশ করতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে বিমানবন্দরেই থেকে যান তিনি। এতে ঠান্ডা এবং ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। শেষে একটি ক্লিনিকে জরুরি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি।
স্থানীয় পুলিশ রবার্টসনের বিষয়টি মার্কিন দূতাবাসের কাছে তুলে ধরে সাহায্য চায়। তবে দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সাড়া দেননি।
পরবর্তীতে সিন্ধু প্রদেশের গভর্নর কামরান তেসোরি বিমানবন্দরে একটি সফরের সময় ওই নারীর দুর্দশার বিষয়ে জানতে পারেন এবং তার দেশে ফেরার জন্য নতুন ভিসা এবং টিকিট জারির ব্যবস্থা করেন।
এরপর পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় রবার্টসনকে দেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করে।
রবার্টসনের এই প্রেমের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে। ফেসবুক, টিকটক এবং স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করে বিদেশি নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়টি আবারও আলোচিত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বিদেশি নারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গড়ে ওঠা প্রেমের সম্পর্কের কারণে পাকিস্তান সফর করেছেন এবং প্রেমিককে বিয়ে করেছেন।
২০২৩ সালের জুনে ৪৯ বছর বয়সি মেক্সিকান নারী পাকিস্তানে এসেছিলেন ১৮ বছর বয়সী ইজাজ আলীকে বিয়ে করতে। তদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফেসবুকের মাধ্যমে। সে নারী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং তার নতুন নাম রাখেন আয়েশা বিবি। তারপর তারা একটি ঐতিহ্যবাহী পশতুন অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন। বিয়ের পর আয়েশা মেক্সিকোতে ফিরে যান এবং ইজাজ তার পরীক্ষা শেষ করার পর মেক্সিকো যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
একইভাবে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে হেলেনা নামের একজন আমেরিকান নারী শিয়ালকোটের ২১ বছর বয়সী কাশিফকে বিয়ে করতে পাকিস্তানে যান। অনলাইনের মাধ্যমে প্রথমে তাদের বন্ধুত্ব এবং পরে প্রেম হয়। সে সময়ে বিভিন্ন সংবাদে জানানো হয়েছিল, বিয়ের আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে চান হেলেনা।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের ৩৫ বছর বয়সী অঞ্জুর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ২৯ বছর বয়সী পাকিস্তানি যুবক নাসরুল্লাহর। ২০২৩ সালে জুলাইয়ে এই ভারতীয় নারী পাকিস্তানে চলে যান এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নতুন নাম রাখেন ফাতিমা। এরপর তারা স্থানীয় একটি আদালতে বিয়ে সম্পন্ন করেন।