জেনিনের ডেপুটি-গভর্নর মনসুর আল-সাদী সতর্ক করে বলেছেন, শরণার্থীশিবিরে ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযান ‘উত্তর গাজায় সংঘটিত গণহত্যার পুনরাবৃত্তি হতে পারে—এটি পরিকল্পিত গণবিধ্বংসী অভিযান’।  

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আল-সাদী জানান, ইসরাইলি বাহিনী জেনিন শহর ও শরণার্থীশিবিরের চারটি প্রধান প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে, ফলে সেখানে প্রবেশ ও বের হওয়ার সমস্ত পথ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।  

তিনি আরও বলেন, শিবিরের কেন্দ্রস্থলে ধারাবাহিক ভবন ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে ইসরাইলি বাহিনী একটি বৃহৎ পরিসরের সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।

এদিকে আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা জানিয়েছেন, গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরাইলি সরকার এখন দখলকৃত পশ্চিম তীরের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, গাজা ইসরাইলের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করলেও, পশ্চিম তীর তাদের জন্য কৌশলগতভাবে লাভজনক অঞ্চল।

বিশারা আরও বলেন, জেনিন ও পশ্চিম তীরজুড়ে চালানো সামরিক অভিযানগুলো আসলে ৭ অক্টোবরের ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি সরানোর একটি কৌশল।  পাশাপাশি, এটি ইসরাইলের জন্য দখলদার নীতিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করছে, বিশেষ করে যদি ট্রাম্প প্রশাসন ফিরে আসে, যা এ ধরনের পদক্ষেপের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র দুই দিন পরই ইসরায়েলি বাহিনী দখলকৃত পশ্চিম তীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ নামে নতুন অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে তারা বিমান হামলার পাশাপাশি হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে আক্রমণ চালায়।

একইসঙ্গে, সাঁজোয়া যান ও বুলডোজারের সহায়তায় বিপুলসংখ্যক ইসরাইলি সেনা জেনিন শরণার্থীশিবিরে প্রবেশ করে। এর আগে, পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে শিবিরে প্রবেশ ও বাহিরে যাওয়ার সব পথ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। 

গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ অভিযানে ইতোমধ্যে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।