গাজায় যুদ্ধবিরতি
ইসরাইল চুক্তি লঙ্ঘন করলে হামাসও বসে থাকবে না, নাজ্জালের হুঁশিয়ারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৮ পিএম
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল জানিয়েছেন, গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসনে ইসরাইল তাদের সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েই আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।
ইসরাইল এই যুদ্ধে তিনটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। সেগুলো হলো- জিম্মিদের মুক্তি, হামাসের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে গুড়িয়ে দেওয়া এবং গাজা পুরোপুরি দখল করা।
মোহাম্মদ নাজ্জালের মতে, ইসরাইল তার এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘তারা সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বন্দিদের মুক্ত করতে পারেনি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে নিতে বাধ্য হয়েছে’।
রোববার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ের বন্দি বিনিময়ের শর্ত হিসেবে প্রথম দিনে ৩ জন ইসরাইলি জিম্মি ও ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি পান। এ নিয়ে সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন হামাস নেতা মোহাম্মদ নাজ্জাল।
এ সময় কাতার, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে তুরস্কের ভূমিকার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন এই হামাস নেতা।
তিনি বলেন, তুরস্কের ভূমিকাও ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যা সরাসরি আলোচনার টেবিলে না থাকলেও প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেছে এবং এর ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে।
এমনকি ‘তুরস্কের অবদান ছাড়া এই চুক্তি সম্ভব হতো না’ বলেও উল্লেখ করেন নাজ্জাল।
এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরাইলি বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
হামাস নেতা নাজ্জাল তার এই মন্তব্যকে কেবল ‘ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং ইসরাইলি সেনাদের গাজা থেকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়াই হামাসের লক্ষ্য বলে জানান।
এদিকে গাজা শাসনের বিষয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, গাজা পরিচালনার জন্য একটি প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী অংশ নেবে।
হামাস নেতা বলেন, ‘আমরা গাজার একচ্ছত্র শাসন দাবি করছি না। বরং একটি টেকনোক্রেট দল তৈরি করে গাজার পুনর্গঠনে কাজ করব’।
তিনি এ সময় মূলত গাজার পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন এবং এই লক্ষ্যে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়র কথা জানান।
চুক্তি লঙ্ঘনের সম্ভাবনা
পরক্ষণেই নাজ্জাল সতর্ক করে বলেন, ইসরাইল যদি এই চুক্তি লঙ্ঘন করে, সেক্ষেত্রে হামাসও বসে থাকবে না, হামাস সদা প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে নেতানিয়াহু যদি তা লঙ্ঘন করেন, আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত’।
হামাসের এই সিনিয়র কর্মকর্তার এই বিবৃতিতে মূলত গাজার ভবিষ্যৎ এবং ফিলিস্তিনের রাজনীতির ক্ষেত্রে আলোচনার গুরুত্ব এবং গাজার পুনর্গঠনের ওপর জোর দেওয়া হয়ছে। সূত্র: আনাদোলু