গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতা ব্লিঙ্কেনকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৬ পিএম
![গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতা ব্লিঙ্কেনকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/01/18/020-678b52e025b51.jpg)
গাজায় নির্বিচার ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থন বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে বাকি জীবন ‘তাড়িয়ে বেড়াবে’ বলে মনে করেন সাবেক মার্কিন কূটনীতিক হালা রারিত।
গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদ জানাতে গত বছর এপ্রিলে পদত্যাগ করেছিলেন হালা রারিত। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করতেন।
সম্প্রতি টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে রারিত আলজাজিরাকে বলেন, গাজায় নির্যাতন ও নিপীড়নের তথ্য–প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের করা আইনকানুন উপেক্ষা করে ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে।
রারিত আরও বলেন, ‘তারা ইচ্ছাকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন করেছে এবং আইনকে উপেক্ষা করে গেছে। এই ইচ্ছাকৃত শব্দটি আমি একদমই হালকাভাবে বলিনি। যখন আমি একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সুরক্ষার শপথ নিয়েছিলাম।’
গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ করে যাওয়া নিয়ে রারিত আরও বলেন, ‘তারা জানত এটি কতটা বিপর্যয়কর হতে পারে। তারপরও তারা অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সব ধরনের প্রক্রিয়া ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা জানত, এটি কতটা বিপর্যয়কর। এরপরও পুরো প্রক্রিয়াকে ফাঁকি দিয়ে তারা অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কাছে অস্ত্র হস্তান্তর নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি আইন রয়েছে। এর মধ্যে একটি আইনে ওয়াশিংটন-সমর্থিত মানবিক সহায়তায় বাধা দানকারী দেশের ওপর নিরাপত্তা সহায়তা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা আছে।
দ্য লেহি আইনে ওই সব সামরিক ইউনিট, যাদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে, তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে।
১৫ মাস ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে এখন পর্যন্ত সেখানে ৪৬ হাজার ৮৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইল সেখানে ত্রাণ বিতরণেও বাধা দিচ্ছে। এ কারণে ছোট্ট ওই ভূখণ্ডের কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
অথচ ব্লিঙ্কেন গাজায় ইসরাইল মানবিক সহায়তা বিতরণে বাধা দিচ্ছে না বলে মার্কিন কংগ্রেসকে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। মানবিক সহায়তা দানকারী বিভিন্ন সংস্থা বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই মূল্যায়ন নাকচ করে দিয়েছিল।
ব্লিঙ্কেনের ইসরাইলের পক্ষে কাজ করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন সময় তাকে ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। তার বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে।
এ সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে আটলান্টিক কাউন্সিলে ব্লিঙ্কেন বক্তৃতা দেওয়ার সময় বেশ কয়েকজন অধিকারকর্মী তাকে ‘গণহত্যার পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ বলে স্লোগান দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে শেষ সংবাদ সম্মেলনে এসে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের তোপের মুখে পড়েছিলেন ব্লিঙ্কেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যাকারী ইসরাইলকে সমর্থনের জন্য ওই দিন তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন সাংবাদিকেরা। সেখানে হট্টগোল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে নিরাপত্তাকর্মীদের দুই সাংবাদিককে জোর করে ওই কক্ষের বাইরে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল।
রারিত বলেন, ‘এটা তাকে তার বাকি জীবন তাড়িয়ে বেড়াবে। নিশ্চিতভাবেই, ইতিহাস তার বিচার করবে এবং এখনই সেই কাজ শুরু হয়ে গেছে।’