গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা বললেন বিশ্বনেতারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি কার্যকর হবে। দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। এ নিয়ে তারা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন।
চলুন দেখে নেওয়া যাক যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোন বিশ্বনেতা কী বললেন-
জো বাইডেন
যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তির কথা নিশ্চিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করবে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করবে এবং ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে আটক থাকার পর জিম্মিদের সঙ্গে তাদের পরিবারের পুনর্মিলন ঘটাবে।’
জো বাইডেন বলেন, ‘লেবাননে যুদ্ধবিরতি ও ইরান দুর্বল হওয়ার পরে হামাস যে ব্যাপক চাপে ছিল এবং আঞ্চলিক সমীকরণ যেভাবে বদলে গিয়েছিল, এই যুদ্ধবিরতি কেবল সেটারই ফলাফলই নয়; বরং আমেরিকার দৃঢ় ও কষ্টসাধ্য কূটনীতিরও ফলাফল। এটা সম্পন্ন করার জন্য তাদের (কূটনীতিকদের) প্রচেষ্টায় আমার কূটনীতি কখনও থেমে থাকেনি।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। এ নিয়ে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একাধিক পোস্টও করেছেন। প্রথম পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে জিম্মিদের জন্য আমাদের একটি চুক্তি হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। সবাইকে ধন্যবাদ!’
ট্রাম্প আরেক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমার জাতীয় নিরাপত্তা দল ইসরাইল এবং আমাদের মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে, যাতে গাজা আর কখনও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হয়। ’
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক শেষে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এটি রোববার থেকে কার্যকর হবে। তিনি রোববার পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গাজায় দ্রুত মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আঙ্কারায় গণমাধ্যমকে বলেছেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের সমাধানের জন্য তুরস্কের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আশা করা যায় যে অবশেষে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজায় প্রাণহানি বন্ধ হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস ধরে ভয়াবহ রক্তপাত এবং অগণিত প্রাণহানির পর অবশেষ সেই দীর্ঘ বিলম্বিত খবর এলো, যেটার জন্য ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি জনগণ মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছিলেন।
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডি ক্রু বলেছেন, ‘দীর্ঘ সংঘাতের পর জিম্মিদের বিষয়ে আমরা বেশ স্বস্তি বোধ করছি। আশা করি, এ যুদ্ধবিরতি যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং একটি টেকসই শান্তির সূচনা করবে। বেলজিয়াম সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোয়ের বলেছেন, ‘ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়কেই বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে হবে এবং এই সমাধান আঞ্চলিকভাবে স্থির করতে হবে।’
সূত্র: রয়টার্স