ইউক্রেনজুড়ে রুশ হামলা, ক্ষতিগ্রস্ত জেলেনস্কির অফিসের পাশের বিদ্যুৎ স্টেশন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের কাছে একটি বৈদ্যুতিক স্টেশনে আগুনে পুড়ে গেছে।
বুধবার ইউক্রেনজুড়ে চালানো রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, খ্রেশচাতিক মেট্রো স্টেশন ও ব্যাংকোভা স্ট্রিটের কাছে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী দেখা গেছে। যার পাশেই ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় অবস্থিত।
এ হামলার পরই মূলত একটি অনলাইন মানচিত্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিস্থিতি দেখিয়ে ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী রোমান গালুশচেঙ্কো জানিয়েছেন, হামলার পরিণামে সতর্কতামূলকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বুধাবার দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে পোলতাভার মিরগোরোদ বিমানবন্দর একটি এক্স-১০১ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ইভানো-ফ্রাংকিভস্ক ও লভিভ এলাকায়ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
চেরকাসির একটি বিমানবন্দরেও হামলা হয়েছে। এই বিমানবন্দরটিই মূলত রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে জাপোরিঝিয়ার দিক দিয়ে ইউক্রেনীয় বিমান অভিযানের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই হামলা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এক টেলিগ্রাম বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের জ্বালানি খাত, বিশেষত ‘গ্যাস অবকাঠামো ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি স্থাপনাগুলো’ রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য ছিল।
তিনি দাবি করেন, এদিন রাশিয়া ৪০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যার মধ্যে অন্তত ৩০টি ভূপাতিত করা হয়েছে।
একই সময়ে ৭০টিরও বেশি রুশ আক্রমণকারী ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের প্রচেষ্টার জন্য আমরা আমাদের জ্বালানি ব্যবস্থার কার্যক্রম বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি’। একই সঙ্গে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিশ্রুতি পূরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ওয়াশিংটনে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন এবং রামস্টেইন ফরম্যাটে আমাদের মিত্রদের প্রতিশ্রুতি এখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অ্যান্টি-মিসাইল উৎপাদনের লাইসেন্সিং নিয়েও আলোচনা করেছি। যা ইউক্রেনের নিরাপত্তার কার্যকর গ্যারান্টি হতে পারে। এটি অর্জনযোগ্য এবং পূরণ করতে হবে’।
মস্কোর প্রতিক্রিয়া
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, এটি ইউক্রেনের সামরিক-শিল্প খাতকে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, ‘আজ সকালে রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স সমর্থনকারী গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস ও জ্বালানি অবকাঠামোর বিরুদ্ধে সমন্বিত হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে এবং সব নির্ধারিত লক্ষ্য সফলভাবে আঘাত করা হয়েছে’।
পৃথক আরেক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় যে, রুশ বাহিনীর সেন্টার ইউনিট দোনেৎস্ক অঞ্চলের ইউক্রাইনকা গ্রাম নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
তবে চলমান সংঘর্ষের কারণে উভয় পক্ষের দাবির বিষয়ে স্বাধীন যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।