Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মহাকাশেও বাঁধ নির্মাণ চীনের

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম

মহাকাশেও বাঁধ নির্মাণ চীনের

পৃথিবীর গণ্ডি পেরিয়ে এবার মহাকাশেও বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে চীন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান রাখতে এ কাজে হাত দিতে চলেছে দেশটি। ইতোমধ্যেই সেই বাঁধের একটি নকশাও প্রকাশ করেছে বেইজিং। এ পরিকল্পনার কথা ফাঁস হতেই বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। যদিও এর বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। 

সম্প্রতি মহাশূন্যে চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। সেখান থেকেই গোটা বিষয়টি দুনিয়ার সামনে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাশূন্যে বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করছেন চীনের বিখ্যাত রকেট বিজ্ঞানী লং লেহাও। এই প্রকল্পের পোশাকি নাম ‘থ্রি গর্জেস ড্যাম প্রজেক্ট অন আর্থ’। কিভাবে মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করবেন চীনের বিজ্ঞানীরা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে তার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। 

রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর জিয়োস্টেশনারি কক্ষপথে এক কিলোমিটার প্রশস্ত সৌর প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে চীনা মহাকাশ গবেষকদের। মহাশূন্যে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ শেষ হলে সেগুলো দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে চীন। 

চীনা গবেষকদের দাবি, দিন-রাতের চক্র, আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনের জেরে এই সৌর প্যানেলের কোনো ক্ষতি হবে না। সব সময় সেখান থেকে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ। চীনা মহাকাশ গবেষক লং বিদ্যুৎ তৈরির এই নিরবচ্ছিন্ন প্রকল্পকে তিন গিরিখাত বাঁধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বর্তমানে চীনের ইয়াংজি নদীর ওপর রয়েছে ওই বাঁধ। সেখান থেকে বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বেইজিং।

অন্য দিকে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, চীনের এই তিন গিরিখাত বাঁধ এতটাই বড় যে, সেটি পৃথিবীর ঘূর্ণন ০.৬ মাইক্রোসেকেন্ড কমিয়ে দিয়েছে। তাই এ ধরনের প্রকল্পকে মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। চীনা গবেষক লং অবশ্য সম্পূর্ণ উলটো কথা বলেছেন। তার দাবি, আমরা এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছি। ভূপৃষ্ঠের ২২ হাজার ৩৭০ মাইল উপরে জিয়োস্টেশনারি কক্ষপথে ওই তিন গিরিখাত বাঁধ মতোই সৌর প্যানেল বসানো হবে। সেখান থেকে আমরা যে সৌরশক্তি পাব তা এক বছরে উত্তোলন করা অপরিশোধিত তেলের সমান হবে। এটা একটা অবিশ্বাস্য প্রকল্প। আমরা এখন শুধুই সামনের দিকে তাকিয়ে আছি।

এ প্রকল্পের বাস্তবায়নে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন। সূত্রের খবর, বর্তমানে এই বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন চীনের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। পুনর্ব্যবহারযোগ্য ভারী বস্তু বহনে সক্ষম রকেট নির্মাণের চেষ্টা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গবেষক লং। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বিজ্ঞানী লং জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য মোট দুটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন হবে। তার মধ্যে একটি হল ‘সিজেড-৫’। এটি লম্বায় ৫০ মিটার বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় রকেটটির নাম ‘সিজেড-৯’, রেখেছেন চীনা মহাকাশ গবেষকরা। মহাশূন্যে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ দ্বিতীয় রকেটটি করবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী লং। তিনি আরও বলেছেন, সিজেড ৯-এর উচ্চতা হবে ১১০ মিটার। এটি ১৫০ টন পর্যন্ত সামগ্রী বহন করতে পারবে। পৃথিবীর নিæ কক্ষপথে সৌর প্যানেল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে যা আদর্শ। নাসার ‘স্যাটার্ন-৫’ এবং স্পেস লঞ্চ সিস্টেমে যে সব উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেট রয়েছে সেগুলো ১৩০ টন পর্যন্ত সামগ্রী বহন করতে পারে।’ চীনা রকেট সেখানে রেকর্ড তৈরি করবে বলে মনে করেন তিনি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম