Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ল্যানসেটের গবেষণা

গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেশি

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৬ পিএম

গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেশি

গাজায় ইসরাইলের অমানবীয় আগ্রাসন এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। দীর্ঘ হচ্ছে নিহতের তালিকা। অবরুদ্ধ অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিনই প্রকাশ করছে মৃতের সংখ্যা। 

তাদের হিসাবে, ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতদের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এই সংখ্যাটি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। 

ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় প্রথম ৯ মাসে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের চেয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ বেশি। 

বৃহস্পতিবার চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই অনুমান করা হয়েছে। শুক্রবার এএফপির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। জবাবে গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরাইল। শুরু থেকে এই যুদ্ধে কত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। 

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রথম ৯ মাসে উপত্যকাটিতে যুদ্ধে ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন নিহত হয়েছেন।

কিন্তু ল্যানসেট গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, একটি অনলাইন জরিপ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত মৃত্যু সংবাদের ভিত্তিতে ‘ক্যাপচার-রিক্যাপচার’ পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখেছে, যুদ্ধের প্রথম ৯ মাসে গাজায় প্রায় ৫৫ হাজার ২৯৮ জন থেকে ৭৮ হাজার ৫২৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। 

গাজায় নিহতের বিষয়ে এই গবেষণার সবচেয়ে ভালো অনুমানটি হলো, উপত্যকাটিতে প্রায় ৬৪ হাজার ২৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর অর্থ হলো- গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে প্রায় ৪১ শতাংশ মৃত্যুর হিসাব বাদ পড়েছে। 

ল্যানসেটের গবেষণা অনুযায়ী, গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৪ হাজার ২৬০ জন হওয়ার অর্থ হলো উপত্যকাটির যুদ্ধপূর্ব জনসংখ্যার প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ নিহত হয়েছেন। 

অন্য কথায়, প্রায় প্রতি ৩৫ জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। 

গাজায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে এই গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকদের একটি দল। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ ৫৯ শতাংশ। 

ল্যানসেটের এই গবেষণায় বিমান হামলা, বিস্ফোরণজনিত আঘাতে নিহত মানুষের হিসাবই শুধু ধরা হয়েছে। অর্থাৎ গবেষণায় স্বাস্থ্যসেবা বা খাবারের অভাবে মৃত্যু কিংবা নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে ধরা হয়নি। নিখোঁজ এসব ব্যক্তি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

গবেষক দলের প্রধান ও লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মহামারি বিশেষজ্ঞ জেইনা জামালউদ্দিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যেসব মৃত্যু আত্মীয়স্বজন অথবা মর্গ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তথ্য বিশ্লেষণে আমরা শুধু সেগুলোই ব্যবহার করেছি’। 

গাজা যুদ্ধ এরই মধ্যে ১৫ মাস পূর্ণ হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৬ জনে। 

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহত হন ১,২০৮ জন। এটা ইসরাইলের সরকারি হিসাব। 

ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা নিয়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে, সেটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে ইসরাইল। কিন্তু জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে। 

ঘটনাপ্রবাহ: হামাস ইসরাইল যুদ্ধ


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম