আরও ৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক প্যাকেজ
গাজা সংকট সত্ত্বেও ইসরাইলকে যুদ্ধবিমান-গোলাবারুদ দিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২১ পিএম
গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ উপেক্ষা করেই দখলদার দেশটির কাছে আরও ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে আমেরিকা। জো বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রস্তাব সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়নে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সিনেট কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন। যার মধ্যে যুদ্ধবিমান ও সামরিক হেলিকপ্টারের জন্য গোলাবারুদ এবং আর্টিলারি শেল অন্তর্ভুক্ত। এই প্যাকেজটিতে ছোট আকারের বোমা এবং ওয়ারহেডও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই চুক্তির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, জো বাইডেন স্পষ্ট করেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইসরাইলের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার অধিকার রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক সরবরাহ চালিয়ে যাবে।
সূত্রটি জানিয়েছে, এই প্যাকেজের আওতাভুক্ত কিছু অস্ত্র বর্তমানে মার্কিন মজুদখানা থেকে সরবরাহ করা হতে পারে। তবে প্যাকেজের অধিকাংশ অস্ত্র সরবরাহে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
সর্বশেষ এই মার্কিন প্যাকেজে ড্রোন এবং অন্যান্য আকাশপথের হুমকির বিরুদ্ধে নিরাপত্তার জন্য AIM-120C-8 এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ১৫৫ মিলিমিটার আর্টিলারি শেল, হেলফায়ার AGM-114 ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৬.৭৫ বিলিয়ন ডলারের অন্যান্য বোমা ও গাইডেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে মার্কিন বা ইসরাইলি প্রশাসনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গত কয়েক মাস ধরে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে আসছে। তা সত্ত্বেও মার্কিন নীতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের কাছে ২০ বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধবিমান ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছিল।
এ বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন বলেছে, তারা গাজায় হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের মতো ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইসরাইলকে সহায়তা করছে।
তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে এবং গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্র দখলদার দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে অবরুদ্ধ গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৫,৮০৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এই যুদ্ধ গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় সবাইকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এমনকি সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট সৃষ্টি করেছে। এর প্রেক্ষিতে বেশকিছু দেশ ও সংস্থা ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। যদিও দখলদার ইসরাইল তা অস্বীকার করে আসছে।
ইসরাইলের বৃহত্তম মিত্র এবং অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবেই ভেটো দিয়েছে।
এমন একটা প্রতিস্থিতিতে ডেমোক্রেট পার্টির নেতা জো বাইডেন ২০ জানুয়ারি তার অফিস ছাড়বেন। একইদিনে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।
উভয়েই অবশ্য ইসরাইলের কট্টর সমর্থক। যার ফলে সামনের দিনগুলোতে গাজা ইস্যুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: ডেইলি সাবাহ