বিচার ছাড়াই ২২ বছর গুয়ানতানামো কারাগারে, মুক্তি পাচ্ছেন তিউনিসিয়ার আল-ইয়াজিদি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৫ এএম
গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি থাকা রিদাহ বিন সালেহ আল-ইয়াজিদিকে নিজ দেশ তিউনিসিয়ান প্রত্যাবাসন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আল-ইয়াজিদিকে ২০০২ সাল থেকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ২২ বছর ধরে এই কুখ্যাত কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল।
সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বলেছে, ৫৯ বছর বয়সি আল-ইয়াজিদি অবশেষে স্থানান্তরের জন্য যোগ্য।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গুয়ানতানামো বে কারাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। একাধিক দেশের কয়েক ডজন সন্দেহভাজনকে সেখানে পাঠানো হয়। বন্দিদের অপদস্থ ও নির্যাতন করার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এই কারাগারের কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস অনুসারে, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে পাকিস্তানি সেনারা আল-কায়েদা যোদ্ধা সন্দেহে আল-ইয়াজিদি আটক করে।
যুক্তরাষ্ট্র কখনও ইয়াজিদিকে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেনি।
হিউম্যান রাইটস ফার্স্টের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৭ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং আবার ২০১০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাকে স্থানান্তরের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিলেন।
নাইন–ইলেভেনের হামলার পরবর্তী সময়ে কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ আটক ব্যক্তিদের রাখার জন্য ২০০২ সালের জানুয়ারিতে গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু হয়েছিল। কারাগারটি দক্ষিণ কিউবার মার্কিন সেনাঘাঁটিতে অবস্থিত। এ কারাগারের জন্য সামরিক কমিশন–নিয়ন্ত্রিত বিশেষ আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। সেটা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত আদালতে প্রচলিত অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা দেয় না।
গুয়ানতানামো বে কারাগারে প্রায় ৮০০ বন্দী ছিলেন, যাঁদের অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে সিআইএর ‘কালো আখড়া’ বা ব্ল্যাক সাইট নামে পরিচিত গুপ্ত নিবাসস্থলগুলোয় আটক থেকেছেন।
এ কারাগারে বর্ধিত জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমের আওতায় বন্দীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চলত। কার্যক্রমটির অনুমতি দিয়েছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন।
পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু আইনি জটিলতা আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপে ওবামার এ উদ্যোগ সফল হতে পারেনি।
গত সোমবার পর্যন্ত, গুয়ানতানামোতে ২৬ জন বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৪ জন স্থানান্তরিত হওয়ার যোগ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সুবিধাটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত চার বছরে সেখানে আটক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রশাসন ন্যূনতম অগ্রগতি দেখিয়েছে।