
প্রিন্ট: ০১ মার্চ ২০২৫, ০২:২০ পিএম
জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন মিখাইল কভেলাশভিলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৮ পিএম

আরও পড়ুন
জর্জিয়ার সাবেক পেশাদার ফুটবলার মিখাইল কভেলাশভিলি রোববার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) জর্জিয়ার যোগদানের আবেদন সরকার স্থগিত করার পর
থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট চলছে। এই রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ
নিলেন কভেলাশভিলি।
অক্টোবরে দেশটির পার্লামেন্টে নির্বাচনে ১২ বছর ধরে দেশ শাসন করে আসা
জর্জিয়ান ড্রিম জয় পায়। তবে কারচুপির অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে আর তখন থেকেই
রাজধানীর পথে পথে বিক্ষোভ শুরু হয়।
এদিকে জর্জিয়ার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সালোমে জুরাবিশফিরি রোববার পদত্যাগ
করতে অস্বীকার করে নিজেকে ‘একমাত্র বৈধ প্রেসিডেন্ট’ বলে দাবি করেছেন।
বাইরে জড়ো হওয়া লোকজনের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট
প্রাসাদ ছেড়ে যাচ্ছেন কিন্তু উত্তরসূরিকে ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বৈধ প্রেসিডেন্ট বসলেই কেবল এই ভবনটি প্রতীক হয়ে উঠবে।
জর্জিয়ার প্রধান চার বিরোধী দল কভেলাশভিলিকে প্রত্যাখানের পাশপাশি পার্লামেন্ট
বয়কট করেছে। ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া কভেলাশভিলি একমাত্র
প্রার্থী ছিলেন। এর আগে জুরাবিশফিরি এই নির্বাচনের নিন্দা জানিয়ে একে ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
এই অচলাবস্থার সমাধান কিভাবে হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জর্জিয়ায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু রয়েছে, দেশটিতে প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপ্রধান
এবং প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টের প্রধান।
যখন ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তখন তিনি জর্জিয়ান ড্রিমের
প্রার্থী হয়েই এসেছিলেন। কিন্তু অক্টোবরের শেষের দিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে
দলটির বিজয়কে ‘রাশিয়ার বিশেষ অভিযান’ বলে নিন্দা জানান তিনি। সেই সঙ্গে পার্লামেন্টের
বাইরে রাতভর ইইউপন্থি বিক্ষোভকে সমর্থনও করেন।
সরকার বলেছে, জুরাবিশফিরি যদি পদ ছাড়ত রাজি না হন, তাহলে তা অপরাধ বলে
বিবেচিত হবে।
বিবিসি বলছে, গত কয়েক বছর ধরে জর্জিয়ান ড্রিম ক্রমবর্ধমানভাবে কর্তৃত্বপরায়ণ
হয়ে উঠেছে। গণমাধ্যম, বিদেশি অর্থায়নপুষ্ট এনজিও এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়কে নিশানা করে
তারা রাশিয়ার মতো আইন পাস করেছে।
পশ্চিমা দুনিয়াকে ‘বৈশ্বিক যুদ্ধবাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে ইউক্রেইনে আক্রমণ
করা রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দেয়নি দলটি আর ইইউ ও নেটোতে যোগদানের
প্রস্তাব নিয়েও উপহাস করেছে।
ইইউতে যোগদানের প্রশ্নে বেশিরভাগ জর্জিয়ানের সমর্থন আছে এবং তা সংবিধানের
একটি অংশ। কিন্তু নভেম্বরে দেশটির ক্ষমতাসীন দল জানায়, সরকার ২০২৮ সালের আগে ইইউয়ে
যোগাদানের বিষয়ে আলাপে করতে চায় না।
এ ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে। দাঙ্গা পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও জল
কামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের দমানোর চেষ্টা করে আর তারা পটকা ও পাথর ছুড়ে পাল্টা
জবাব দেয়।
জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জর্জিয়ান ড্রিম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের
ভিজিনা ইভানিশভিলির ওপর চলতি সপ্তাহেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।