Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

‘আজ ঈসা (আ.) জীবিত থাকলে কেউ উদ্বাস্তু ও ক্ষুধার্ত থাকত না’

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম

‘আজ ঈসা (আ.) জীবিত থাকলে কেউ উদ্বাস্তু ও ক্ষুধার্ত থাকত না’

‘আজ যদি হযরত ঈসা (আ.) আমাদের মাঝে থাকতেন, তাহলে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী ও জালিম শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এক মুহূর্তও দেরি করতেন না। সেইসঙ্গে আধিপত্যকামী শক্তিগুলোর যুদ্ধ ব্যয় মেটাতে গিয়ে বিশ্বে যে শত শত কোটি মানুষ উদ্বাস্তু ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছে, তাও তিনি সহ্য করতেন না’।

সম্প্রতি হযরত ঈসা মাসিহ (আ.)-এর জন্মদিন উপলক্ষে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক বাণীতে এ কথা বলেন। 

চিন্তাবিদরা মনে করেন, খ্রিস্টান ধর্ম বর্তমানে হযরত ঈসা (আ.)-এর চিন্তাধারা ও দর্শন থেকে বহু দূরে সরে গেছে।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষয়টি নিয়ে তেহরান থেকে প্রকাশিত দৈনিক রেসালাত ‘ফিলিস্তিনের সন্তান মাসিহ’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। 

এতে মাসিহিয়্যাত বা প্রকৃত খ্রিষ্টধর্ম এবং বিশ্বের চলমান ঘটনাপ্রবাহ বিশেষ করে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে ভ্যাটিকানের আচরণের সমালোচনা করে বলা হয়েছে- কোন হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে ভ্যাটিকান সিটি খ্রিস্টধর্মের রাজধানী হয়ে উঠেছে, তা বোধগম্য নয়। 

এমনকি হযরত ঈসা (আ.)-এর জন্মভূমি যে বেথেলহেম, সে কথা বিশ্বের বেশিরভাগ খ্রিস্টান জীবনে একবারের জন্যও শোনেনি। 

ভ্যাটিকান সিটি বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের মূল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। অথচ বেথেলহেমে, যেখানে হযরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয়েছিল, সেই চার্চ অফ দ্য নেটিভিটি ইসরাইলি যুদ্ধ ও অবরোধের শিকার হয়ে একাকী দাঁড়িয়ে আছে। চার্চ অফ দ্য নেটিভিটি হচ্ছে একটি বিশেষ গুহা, যার ওপরে প্রথম চার্চ নির্মিত হয়েছিল। ঐতিহ্যগতভাবে এটিই হযরত ঈসা (আ.) বা খ্রিস্টানদের ভাষায় যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান বলে বিশ্বাস করা হয়।

দৈনিক রেসালাতের বরাত দিয়ে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাস্তবতা হচ্ছে- গাজা যুদ্ধ নামের পরীক্ষায় অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মতো ভ্যাটিকানও ফেল করেছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে ভ্যাটিকান দখলদার ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীদের সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারত।

গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সংগঠিত করার যে রাজনৈতিক দায়িত্ব জাতিসংঘের পালন করার কথা ছিল, তা ভ্যাটিকানের জোরালো সমর্থন পেলেই সম্ভব ছিল। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয় ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। 

মূলত গত কয়েক শতাব্দী ধরেই ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্ম তার শান্তিকামী ও দয়ালু স্বরূপ হারিয়ে ফেলেছে।

এটা কীভাবে সম্ভব, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় দাবিদার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করে? অথচ নিজের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করার জন্য এটি ছিল গির্জার সামনে থাকা সবচেয়ে বড় সুযোগ।  

রেনেসাঁ ও আধুনিকায়নের যুগে খ্রিস্টান ধর্ম তার যে গৌরব হারিয়ে ফেলেছিল, তা পুনরুদ্ধার করার সর্বোত্তম সুযোগ গাজায় তৈরি হয়েছিল। গির্জার পক্ষ থেকে খ্রিস্টানদের এ কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া উচিত ছিল যে, ধর্মের চেয়ে নিরাপদ আশ্রয় আর কোথাও নেই।

কিন্তু তা হয়নি। বরং গির্জা আরেকবার নিজের দুর্বল অবস্থান প্রমাণ করেছে। পোপ ও ক্যাথলিক খ্রিষ্টধর্মের নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার এই পদক্ষেপের কারণে খ্রিস্টান ও গির্জা হযরত ঈসা (আ.)-এর বিশ্বাস থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে।

গাজা যুদ্ধে সরকার, ধর্ম ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে পশ্চিমা সভ্যতার দাবিদারদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে গেছে।  এর মধ্যে পশ্চিমা মডেলে রূপান্তরকৃত খ্রিস্টান ধর্ম যা গির্জাগুলোতে ঠাঁই নিয়েছে, সেটিও নিজের চরিত্র প্রকাশ করে দিয়েছে।

হযরত ঈসা (আ.) ফিলিস্তিন নামক যে পূণ্যভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছেন, তা আজ শক্ত ও নরম উভয় পদ্ধতিতে ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে। পরম পদ্ধতি হচ্ছে- ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সেখানে ইউরোপীয় ইহুদিবাদীদের এনে বিলাসবহুল জীবনযাপনের সুযোগ করে দেওয়া। 

আর কঠিন পদ্ধতি- যা আমরা গাজায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দেখছি। ফিলিস্তিনে এখন যা চলছে তা স্রেফ দখলদারিত্ব নয়, বরং ধ্বংস করার প্রক্রিয়া। সূত্র: পার্সটুডে

ঘটনাপ্রবাহ: হামাস ইসরাইল যুদ্ধ


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম