সুন্নি বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছে তুরস্ক, পতনের আগে ইরানকে বলেছিলেন আসাদ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম
সুন্নি বিদ্রোহীদের সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে তুরস্ক, পতনের ঠিক আগে মিত্র ইরানের কাছে এমন অভিযোগ করেছিলেন সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের হুমকির মুখে গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান আসাদ। এতে সিরিয়া বাশার আল-আসাদ তুরস্ক
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির কাছে তুরস্কের ব্যাপারে নিজের মনোভাব জানিয়েছিলেন আসাদ। দুই ইরানি কর্মকর্তা এই সপ্তাহে রয়টার্সকে এ তথ্য বলেছেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সিরিয়ায় আসাদের পতনে তুরস্ক এ ঘটনার মূল বিজয়ী। তুরস্ক এখন তাদের দেশের ওপর সিরীয় শরণার্থীদের নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটা সমাধানের আশা করতে পারে, কুর্দি অঞ্চলে আরও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
সাদ্দাম হোসেনের আগ্রাসনের কালে সিরিয়া ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এর প্রতিদানে ২০১১–১৭ সাল পর্যন্ত সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেট ও আল–কায়েদার আক্রমণ মোকাবিলায় বাশার আল–আসাদের সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল ইরান।এখন মধ্যপ্রাচ্যে আসাদের পতনে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে ইরান, এর অক্ষশক্তি ও মিত্ররা।
মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হোসেন মুসাভিয়ান লিখেছেন, আরব দেশগুলো সিরিয়ায় ইরানের প্রভাব খর্ব হওয়ায় সন্তুষ্ট হলেও হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর অভিযান সংগঠিত করেছে তুরস্ক। এসব গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডানসহ বেশ কিছু আরব দেশ মুসলিম ব্রাদারহুড ও দলটির মতাদর্শের বিরোধী। তবে এ কথা সবার জানা, ব্রাদারহুডের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে তুরস্কের। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্কের প্রভাব বিস্তার করতে চলেছে এবং সিরিয়ায় ব্রাদারহুড আধিপত্য বিস্তার করবে।
এর আগে গত সোমবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ সরকারকে উৎখাতে বড় অবদান রেখেছে তুরস্ক। বেশ কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ শেষে ছয় মাস আগে বিদ্রোহীরা তুরস্ককে এ অভিযানের ব্যাপারে অবহিত করে। ওই সময় দেশটির কাছ থেকে মৌন সম্মতি পায় তারা।
সিরিয়ার বিদ্রোহী দলের এক সদস্য ও এক কূটনীতিক বলেছেন, তুরস্ককে না জানিয়ে বিদ্রোহীদের এ অভিযান শুরুর কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ গৃহযুদ্ধের শুরু থেকেই তাদের সহায়তা করছিল আঙ্কারা।
এ ছাড়া সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তুরস্কের সেনাদের উপস্থিতি আছে। এইচটিএসের সঙ্গে বিশাল এ অভিযানে যোগ দেওয়া আরেক বিদ্রোহী দল সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে (এসএনএস) সহায়তা করে তুরস্ক। যদিও এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে তারা। কিন্তু আসাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় তাদের তুরস্ক ঠিকই সহায়তা করেছে।