পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমেছে দলটির নেতাকর্মীরা। পুলিশের তীব্র দমন পীড়ন, রাস্তা অবরোধ এবং গণগ্রেফতারের পরও ইসলামাবাদমুখী গাড়িবহর এগিয়ে যাচ্ছে। আর এতে যোগ দিয়েছেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিও। তিনি বলেছেন, ইমরান খানের মুক্তি ছাড়া ঘরে ফিরবেন না।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এআরওয়াই নিউজ।

জানা গেছে, রোববার রাতেই বুশরা বিবির গাড়িবহর অ্যাটক হয়ে হাসানাবদালে পৌঁছায়। পাঞ্জাবে প্রবেশ করার মুখে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।  তবে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বুশরা বিবি ইসলামাবাদমুখী সমর্থকদের বহরের একটি বহরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যেখানে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুরও রয়েছেন।

বুশরা বিবি বলেছেন, তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন এবং ইমরান খানের মুক্তি ছাড়া ফিরবেন না।  

কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সময় নষ্ট হচ্ছে। আপনারা নিজেদের গাড়িতে অবস্থান করুন, যাতে আমরা দ্রুত সেখানে (ইসলামাবাদ) পৌঁছাতে পারি।’ 

সামাজিকমাধ্যম ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে দেখা গেছে, ইসলামাবাদ অভিমুখী শতশত গাড়ির বহর বিক্ষোভে যোগ দিতে মহাসড়কে অবস্থান করছে।

এদিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের মতে, অ্যাটক ব্রিজে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ওমর আইয়ুবের নেতৃত্বে হরিপুর থেকে আসা সমর্থকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এসময় বিক্ষোভকারীরা চারপাশের গ্রিনবেল্ট এবং গাজী ব্রিজে পার্ক করা একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তক্ষিলা চেকপোস্টে পৌঁছলে পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। কিন্তু পিটিআই কর্মীদের অগ্রসরতায় পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশকে।

পিটিআই ইসলামাবাদের ডি-চকে এমন সময় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, যখন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর ইসলামাবাদ সফর করবেন। এই সফরকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের উদ্বেগ বেড়েছে।

নির্বাচনে গণরায় চুরি, বেআইনি গ্রেফতার ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনীর প্রতিবাদে ১৩ নভেম্বর জেল থেকে এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন ইমরান খান। ওই সময় এ বিক্ষোভকে ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেন তিনি।

ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, সদ্য প্রণীত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আইন লঙ্ঘন করে কোনও বিক্ষোভ আয়োজন করতে দেওয়া যাবে না। এর পাশাপাশি, রাজধানীর প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্টগুলো সিল করা হয়েছে এবং ধারা ১৪৪ জারি করা হয়েছে।

এদিকে বিক্ষোভের জেরে সহিংসতা ঠেকাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানিয়েছেন, মোবাইল পরিষেবা সচল থাকলেও ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে।

ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, ইসলামাবাদ, করাচি, পেশোয়ারসহ অন্যান্য শহরেও ইন্টারনেট সংযোগে বিঘ্ন ঘটছে।

এছাড়া পিটিআইয়ের বিক্ষোভের জেরে আজ ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডির কাছাকাছি শহরগুলোতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।