এবার পশ্চিমাদের ওপর হামলার ইঙ্গিত পুতিনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১১ পিএম
সংগৃহীত
ক্ষমতা হস্তান্তরের শেষ সময়ে এসে ইউক্রেনকে রাশিয়ায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর সেই অনুমোদন পেয়ে ১৯ নভেম্বর রাশিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ছয়টি এটিএসিএমএস অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ইউক্রেন। এরপর ২১ নভেম্বর ব্রিটেনের তৈরি স্টর্ম শ্যাডো ও যুক্তরাষ্ট্রে এইচআইএমএআরএস অস্ত্র দিয়ে আবারও হামলা চালায় কিয়েভ। পরিপ্রেক্ষিতে এবার পশ্চিমাদের ওপর পাল্টা হামলার হুশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেন যুদ্ধকে বৈশ্বিক যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর হামলার ইঙ্গিত দিয়েছেন পুতিন।
রাশিয়া ইউক্রেনে একটি আগামী প্রজন্মের মধ্যবর্তী-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। যা একটি পারমাণবিক পেলোডমুক্ত করতে সক্ষম। আর এই বিষয়টিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি দেখছেন ‘পাগল প্রতিবেশীর’ পক্ষ থেকে যুদ্ধের স্কেল এবং নৃশংসতা হিসেবে। অন্যদিকে কিয়েভের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়া প্রতিটি ক্ষেত্রে সংঘাত বাড়ানোর জন্য দায়ী।
রাশিয়ার মধ্যবর্তী-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সাধারণত ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। যা নিজেদের ভূখণ্ডে থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে আঘাত হানতে সক্ষম। আর সেই হুমকিই এবার দিয়েছেন পুতিন।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিদ্রোহী ভাষণে পুতিন ইউক্রেনের মিত্রদের প্রতি কটাক্ষ করেন। সেই সঙ্গে কিয়েভকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য পশ্চিমা সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ায়, প্রতিশোধ নেওয়ার সতর্কবাণী দেন।
পুতিন বলেন, ‘আমরা নিজেদেরকে সেইসব দেশের সামরিক স্থাপনার বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্র ব্যবহার করার অধিকারী মনে করি যারা তাদের অস্ত্রকে আমাদের স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়।’
সেই সঙ্গে ইউক্রেনের আক্রমণের বিপরীতে নিজেদের সাফল্যের কথাও জানান পুতিন। বলেন, ‘মার্কিন-প্রেরিত আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) এবং ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো পেলোডগুলিকে মস্কোর বিমান প্রতিরক্ষা দ্বারা গুলি করা হয়েছে। যার ফলে শত্রুরা যে লক্ষ্যগুলি নির্ধারণ করেছিল তা অর্জন করতে পারেনি।’
পুতিনের এমন হুঁশিয়ারির পর জেলনস্কি বাকি দেশগুলোকেও সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই হামলায় চূড়ান্ত প্রমাণ যে রাশিয়া অবশ্যই শান্তি চায় না। অন্যান্য দেশগুলিও পুতিনের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। রাশিয়াকে সত্যিকারের শান্তির জন্য আহ্বান জানানো প্রয়োজন। আর যা কেবল শক্তির মাধ্যমেই সম্ভব। অন্যথায়, শুধুমাত্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধেই নয়, ক্রমাগত রুশ হামলা, হুমকি এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে।’
রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের রাজধানীতে বেশ কয়েকটি বিদেশী দূতাবাস সাময়িকভাবে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। যা নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি রাশিয়ার বেপরোয়া আচরণের আরেকটি উদাহরণ।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘নতুন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন উদ্বেগজনক ব্যাপার। যা বোঝায় এ যুদ্ধ ভুল পথে যাচ্ছে।’