
প্রিন্ট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২২ পিএম
ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে উদ্ধার হওয়া এই মাছ নিয়ে কেন এত জল্পনা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম

আরও পড়ুন
সমুদ্রের গভীরতম অঞ্চলে বসবাস করে ডুমসডে ফিশ বা ‘কেয়ামতের মাছ’ হিসেবে পরিচিত অরফিশ। এই মাছ দেখলে খারাপ সময় আসে এমন ধারণা রয়েছে মার্কিন জীবনধারায়। এই ধরনের প্রাণী সমুদ্রে দেখা যায় খুব কমই। অনেকে মনে করেন, কোনও বিপর্যয় ঘটার আগে এই মাছের দেখা পাওয়া যায়। সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার এনকিনিটাস উপকূলীয় অঞ্চলে এই অরফিশ মাছের দেখা মিলেছে।
বলা হচ্ছে, এ নিয়ে গত তিন মাসে তিনবার দুর্লভ এই মাছ মার্কিন উপকূলে ভেসে এসেছে।
এর আগে সাধারণত গত এক শতাব্দীতে অর্থাৎ ১০০ বছরের মধ্যে মাত্র ২২ বার এ মাছ দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। যা সামুদ্রিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। বিপুল আকৃতির জন্য অনেকে এই মাছকে অনেকে ‘দানব’ হিসেবে আখ্যা দেয়।
সান ডিয়েগোতে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির ওশানোগ্রাফি বিভাগের স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশনের অধ্যাপক অ্যালিসন লাফেরিয়া এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, গত ৬ নভেম্বর অরফিশের ভেসে আসার সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে। সেদিন এনকিনিটাস উপকূলের গ্যান্ডভিউ বিচে ৯ ফুট দীর্ঘ ওই মাছটিকে দেখা যায়।
অ্যালিসন আরও জানান, মৃত ওই মাছটি উপকূল থেকে উদ্ধার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন। পরে এটিকে একটি আঞ্চলিক মৎস্যবিজ্ঞান কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়।
এ ছাড়া স্ক্রিপস ওশানোগ্রাফির সামুদ্রিক কঙ্কাল সংগ্রাহক কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বেন ফ্রেবল বলেছেন, ‘আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি এবং আরও গবেষণা এবং চূড়ান্ত সংরক্ষণের জন্য নমুনাটি হিমায়িত করেছি।’
ডেইলি মেইল অনুসারে, অরফিশ মাছটি ৩০০০ ফুট গভীরতায় থাকে। এই মাছ ধরা খুব একটা সহজ কাজ নয়। মারা গেলেই কেবল এর মৃতদেহ সমুদ্রের তীরে ভেসে থাকতে দেখা যায়।
পৌরাণিক কাহিনীতে আছে ভূমিকম্পের আগে অরফিশকে দেখা যাবে অগভীর পানিতে। বিশেষ করে ফিলিপিনের উপকূলে বিভিন্ন সময় ভূমিকম্পের আগে প্রায় ৬টি অরফিশকে সাগর উপকূলের বিভিন্ন স্থানে দেখা গিয়েছিল। ওই ভূমিকম্পে ফিলিপিনের সুরি গাঁও শহরের ৮ জন মারা যান এবং দুইশো জনের মত আহত হয়েছিলেন।
এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ান উপকূলে একটি অরফিশ গভীর জল থেকে ওপরের দিকে উঠে এলে এটি ডুবুরিদের নজরে পড়ে। ওই সময় জাপানের ভূমিকম্পের জন্য এটিকে একটি পূর্বসংকেত হিসেবে চিহ্নিত করেন অনেকে।
জাপানি বিশ্বাস অনুযায়ী, এত বড় দুর্যোগ কোনো সংকেত ছাড়াই চলে আসেনি। তাই দেখা পাওয়া সেই অরফিশকেই টেনে আনেন তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে টুইটারে এ বিষয়ে অনেকে পোস্ট দেন।
এসব টুইট থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে জাপানে ভূমিকম্পের জেরে যে প্রলয়ংকরী সুনামির সৃষ্টি হয়েছিল, তার আগের বছরটিতে ডজনখানেক অরফিশ সমুদ্রের তীরে ভেসে এসেছিল।