রুশদির ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বই নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তি উধাও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদির বই ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ এর ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে ভারত। ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার এ নিষেধাজ্ঞা দেয়। বইটি ভারতের আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয় সে সময়। যদিও সেই বিজ্ঞপ্তি এখনও উধাও।
কেন এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে না এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে ২০১৯ সালে একটি মামলা হয়। যার প্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তিটি খোঁজ করা শুরু হয়। যদিও পাঁচ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত মূল বিজ্ঞপ্তি আদালতকে দেখাতে পারেনি। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি রেখা পাটিল ও বিচারপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার মূল বিবৃতি ছাড়া এই মামলায় এগোনোর কোনো অর্থ নেই।
কী নিয়ে মামলা?
২০১৯ সালে সন্দীপন খান আদালতে আবেদন জানিয়ে বলেন, তিনি রুশদির এই বইটি বিদেশ থেকে আনাতে পারছেন না। বলা হচ্ছে, ১৯৮৮ সালের ৫ অক্টোবর সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) বইয়ের আমদানি বন্ধ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু তিনি কোনো সরকারি জায়গায় এই বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি এই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করতে চান। কারণ, তিনি মনে করেন, এই নির্দেশ তার বই পড়ার অধিকার ভঙ্গ করছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
শুনানির সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, কেউই এই বিজ্ঞপ্তি দেখাতে পারছেন না। এমনকী এই বিজ্ঞপ্তি যিনি তৈরি করেছিলেন বলা হচ্ছে, তিনিও সেটা দেখাতে পারেননি। যে কারণে বিচারপতিরা জানান, ‘যেখানে বিজ্ঞপ্তিই নেই, সেখানে তার বৈধতা যাচাই করার কোনো ভিত্তি নেই। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামনে এই ধারণা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই যে, এই ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্বই নেই। আমরা তার বৈধতার বিচার করতে পারছি না। তাই আমরা এই রিট আবেদনকে নিস্ফল বলে মনে করছি।’
এবার কী হবে?
কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত টাইমস নাও-কে বলেছেন, ‘ভারতে মতপ্রকাশের অধিকার আছে। আবার কোনো সম্প্রদায়ের বিশ্বাসে আঘাত করলে সেই বই সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। রুশদির বইটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে মামলা হয়েছিল। এখন আদালত যা বলছে, সেটাই মানতে হবে।’
রুশদির বই ভারতে আনা যাবে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য সরকারিভাবে কিছুই বলা হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের মতামত প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।