Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ফের যেভাবে ‘ব্লু -ওয়াল’ ভেঙে বিজয়ী হলেন ট্রাম্প?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম

ফের যেভাবে ‘ব্লু -ওয়াল’ ভেঙে বিজয়ী হলেন ট্রাম্প?

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী ‘ব্লু -ওয়াল’ খ্যাত ডেমোক্রেট-শাসিত রাজ্যগুলোর ওপরেই নির্ভরশীল ছিল। পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন এবং মিশিগানের মতো রাজ্যগুলোতে বিজয়ই তাকে ফের হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর জন্য সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে।

‘রেড মিরেজ’ এবং ফলাফলের পরিবর্তন

নির্বাচন শেষে যখন ভোট গণনা চলছিল, তখন অনেক বিশ্লেষক ‘রেড মিরেজ’ অনুমান করেছিলেন, যেখানে রিপাবলিকানরা ব্যক্তিগতভাবে ভোট দিয়ে লাল রঙে মার্কিং করছিলেন এবং ডেমোক্র্যাটরা মেইলে দেওয়া ভোটের মাধ্যমে নীল রঙে। 

তবে ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট অতিক্রম করার পর ট্রাম্প যখন তার নেতৃত্ব ধরে রেখেছিলেন, তখন ডেমোক্রেটদের জয়ের আশা ম্লান হয়ে যায়।

‘ব্লু -ওয়াল’ এবং ট্রাম্পের বিজয়

‘ব্লু -ওয়াল’ বলতে ঐসব রাজ্য বোঝায়, যেখানে দীর্ঘ সময় ধরে ডেমোক্রেটরা জয়ী হয়ে আসছিল। যেমন পেনসিলভানিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিন। 

২০১৬ সালে ট্রাম্প ডেমোক্রেটদের বিরুদ্ধে এই রাজ্যগুলোতে বিজয় অর্জন করেন এবং ২০২০ সালে জো বাইডেন আবার এই রাজ্যগুলো পুনরুদ্ধার করেন। এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প আবারও এই রাজ্যগুলোতে জয়ী হয়েছেন। যা হ্যারিসের পরাজয়ের কারণ হিসাবে ধরা হচ্ছে।

তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ট্রাম্পের সাফল্য

পেনসিলভানিয়া: ট্রাম্প এখানে ২ শতাংশ ব্যবধানে বিজয়ী হন এবং ১৯ ইলেক্টোরাল ভোট অর্জন করেন।

উইসকনসিন: এখানে ট্রাম্প ০.৯ শতাংশ ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে ১০ ইলেক্টোরাল ভোট অর্জন করেন।

মিশিগান: ট্রাম্প এই রাজ্যে ১.৪ শতাংশ ব্যবধানে বিজয়ী হন এবং ১৫ ইলেক্টোরাল ভোট অর্জন করেন।

ডেমোক্রেটদের পরাজয়ের কারণ

১. অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মান: হ্যারিসের প্রচারণায় মূলত নারী অধিকার এবং গর্ভপাতের অধিকারের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বিষয়গুলো ডেমোক্রেটদের প্রচারণায় প্রায় অনুপস্থিত ছিল। যা ট্রাম্পের পক্ষে যায়। 

ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া ৫১ শতাংশ মানুষ অর্থনৈতিক পরিচালনায় তার প্রতি আস্থা রাখে, যা হ্যারিসের তুলনায় ঢের বেশি।

২. জোট গঠন এবং প্রার্থী নির্বাচন: হ্যারিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মিনেসোটা গভর্নর টিম ওয়ালজকে নির্বাচন করা এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ তিনি তার প্রচারণায় ডেমোক্রেটদের পক্ষে শক্তিশালীভাবে ভূমিকা রাখতে পারেননি। 

কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, পেনসিলভানিয়া গভর্নর জোশ শাপিরোকে সহকারী হিসেবে বাছাই করলে হয়তো হ্যারিসের পক্ষে ভোটারের সংখ্যা বাড়তে পারত।

৩. মিশিগানে গাজা ইস্যু: মিশিগানে আরব-মার্কিন জনগোষ্ঠী বেশি হওয়ায় গাজার ওপর ইসরাইলের সাম্প্রতিক অভিযান একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রাজ্যে অনেক ভোটার গাজা সংকটে ইসরাইলকে সমর্থনকারী উভয় প্রার্থীর প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অনেক আরব-মার্কিন ভোটার এই কারণে গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনের দিকে ঝুঁকেছেন, যিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

৪. তৃতীয় পক্ষের প্রভাব: জিল স্টেইন এবং তৃতীয় পক্ষের অন্যান্য প্রার্থীরা পেনসিলভানিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিনে প্রায় ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যা ডেমোক্রেটদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে।

এই সমস্ত কারণ মিলিয়ে ডেমোক্রেটরা এবারের নির্বাচনে ‘ব্লু -ওয়াল’ রাজ্যগুলোতে হেরে গেছে। যা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পথ সুগম করেছে। সূত্র: আল জাজিরা

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম