স্পেনে ভয়াবহ বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বুধবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মঙ্গলবারের এই ভয়াবহ বন্যায় ভ্যালেন্সিয়ার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে এবং অনেক শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীরা রাতেও বন্যাকবলিত এলাকায় সন্ধান চালাচ্ছিলেন।
উটিয়েল শহরের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করে জলমগ্ন এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা চলাচ্ছেন।
ভ্যালেন্সিয়ার আঞ্চলিক নেতা কার্লোস মাজন জানান, অনেক এলাকা এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তিনি বলেন, যদি জরুরি সেবাগুলো পৌঁছাতে না পারে, তবে তা সক্ষমতার অভাবে নয় বরং অ্যাক্সেস না থাকার কারণে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, কিছু এলাকায় পৌঁছানো একেবারেই অসম্ভব।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায় যে, অনেকে বন্যার পানির মধ্যে আটকে আছেন এবং কিছু মানুষকে বন্যার পানি থেকে বাঁচতে গাছে চড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এছাড়া, আলজিরা শহরে অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা বন্যায় আটকে পড়া চালকদের গাড়ি থেকে উদ্ধার করতেও দেখা গেছে।
স্থানীয় জরুরি সেবাগুলো নাগরিকদের রাস্তায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে এবং পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অফিসিয়াল উৎসগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে পরামর্শ দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ উদ্ধারকারী ইউনিটকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা AEMET মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ায় রেড অ্যালার্ট জারি করে।
টুরিস এবং উটিয়েলের মতো কিছু এলাকায় প্রায় ২০০ মিলিমিটার (৭.৯ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে। যদিও এখন বৃষ্টিপাত কমে আসায় সেই সতর্কতা স্তর নামিয়ে হলুদ করা হয়েছে।
ভূমধ্যসাগরের উষ্ণতার কারণে এ ধরনের বৈরী আবহাওয়ার ঘটনা এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। যা ভূমধ্যসাগরের বর্ধিত পানি বাষ্পীভবনের ফলে বৃষ্টিপাতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
স্পেনের এই বন্যাকে ১৯৯৬ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা-সম্পর্কিত বিপর্যয় বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই বছর পাইরেনিস পর্বতের কাছে বিয়েস্কা শহরের কাছে আকস্মিক বন্যায় ৮৭ জন নিহত এবং ১৮০ জন আহত হয়েছিলেন।
অন্যদিকে এই বন্যাটি ২০২১ সালের পর ইউরোপের সবচেয়ে মারাত্মক বন্যা। ২০২১ সালের সেই বন্যায় কেবল জার্মানিতেই ১৫৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।