জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হতে চায় তুরস্ক, যা বললেন এরদোগান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩ পিএম
তুরস্ক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ নিশ্চিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
শুক্রবার ইস্তানবুলে জুম’আর নামাজ আদায়ের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভায় অংশ নিয়ে দেশে ফেরেন।
এরদোগান বলেন, ‘তুরস্ক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা তেমন কোনো ফলাফল অর্জন করতে পারিনি’।
এর কারণ হিসেবে এরদোগান উল্লেখ করেন যে, বর্তমান স্থায়ী সদস্যরা তুরস্কের প্রার্থিতার প্রতি কোনো সমর্থন দেখায়নি। তিনি এ সময় আবারও জাতিসংঘের সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান সিস্টেম ১০টি অস্থায়ী সদস্যকে উপেক্ষা করে পাঁচটি স্থায়ী সদস্যকেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে, যা পরিবর্তন হওয়া সময়ের দাবি।
তিনি আগেও এ বিষয়টি নিয়ে বলেছেন যে, ‘পৃথিবী এই পাঁচটি দেশের চেয়েও বড়’।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বর্তমানে ১৫টি সদস্য নিয়ে গঠিত। যেখানে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য– চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে, যারা সাধারণ পরিষদ দ্বারা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। আর কেবল স্থায়ী সদস্যদেরই যে কোনো বিষয়ে ‘ভেটো’ (আমি মানি না) দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
এছাড়াও এরদোগান সম্প্রতি নিউইয়র্কে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিসের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয়ে বলেন যে, তারা ২০২৫ সালের প্রথম দিকে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সহযোগিতা কাউন্সিল বৈঠক করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং এজিয়ান সাগরে চলমান বিরোধগুলো সমাধান করার পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন। মিৎসোটাকিস এ সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তুরস্ক-গ্রিস সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় উচ্চ পর্যায়ে সমাধান করার লক্ষ্যেই মূলত এ কাউন্সিল গঠিত হয় এবং তুরস্ক-গ্রিস সম্পর্কের জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি তৈরি করা হয়েছিল। এ কাউন্সিল পাঁচবার বৈঠক করেছে, যার সর্বশেষটা হয়েছে গত বছর গ্রিসে।
এরদোগান জাতিসংঘের একান্ত বৈঠকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের সঙ্গে তার বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন। পাশিনিয়ান আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিরোধ সমাধানে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।
এরদোগান বলেন, এই দুই দেশ আশা করা যায়, তাদের এমন মনোভাবের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করবে।
১৯৯১ সাল থেকে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত ছিল, যখন আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত কারাবাখ অঞ্চল এবং সংলগ্ন সাতটি অঞ্চল দখল করে।
২০২০ সালের শরৎকালে ৪৪ দিনের যুদ্ধে আজারবাইজান সেসব অঞ্চলের অধিকাংশই পুনরুদ্ধার করে। যুদ্ধটি একটি রাশিয়া-মধ্যস্থ শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়। যা তাদের সীমান্ত নির্ধারণ এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সুযোগ দেয়। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি